আ’লীগ বিএনপি ও জাসদ নেতাকর্মীদের মাদক কানেকশন

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাসদের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মাদক সেবন এবং ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এদের অনেকে একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে জেলে গেছেন। মামলাগুলো বিচারাধীন আছে। এরপরও পুলিশ তাদের মাদকের পথ থেকে ফেরাতে পারছে না। জনগণ মাদকসেবী এসব রাজনীতিকদের সংগঠন থেকে চিরতরে সরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এদের মধ্যে অন্যতম মাদকসেবী ও বিক্রেতারা হলেন- নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তপন চন্দ্র মোহন্ত দুলাল, সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মাহফুজার রহমান মাফু, যুবলীগ কর্মী রফিকুল ইসলাম, সবুজ ও প্লাবন কুমার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রণীত কুমার, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান আলী, বিএনপি সদস্য আবদুল আলিম, পৌর যুবদলের সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী, মাজগ্রামের যুবদল কর্মী কবির এবং জাসদ কর্মী গোলাপ হোসেন। নন্দীগ্রাম থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ উপজেলায় রাজনৈতিক দলের অনেক দায়িত্বশীল নেতাকর্মী মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। সম্প্রতি ফেসবুকে আনিসুর রহমানের মাদকসেবনের ভিডিও চিত্র প্রকাশ হয়েছিল। সংগঠন থেকে তার বিরুদ্ধে আনাস্থাও আনা হয়। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে রাজনীতি করছেন। যুবলীগ নেতা দুলালকে সোমবার রাতে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের এক বা একাধিকবার মাদকসহ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা আবার মাদক সেবন ও ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। এদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর অধিকাংশের চার্জশিট হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের মাদক সেবনের একটি ভিডিও চিত্র ফেসবুকে দেখা যায়। যুবলীগ সভাপতি দুলাল মাদক সেবন করে সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সোহাগকে মারধর করেন। এ দুটি ঘটনায় ভাটরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোরশেদুল বারী ২৬ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুরের বিরুদ্ধে অনাস্থা এবং যুবলীগ নেতা দুলালের শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন। যুবলীগ নেতা দুলাল গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুরের বিরুদ্ধে আজও সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুর রহমান জানান, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আগে মাদক সেবন ও বিক্রি করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে মৌখিকভাবে শাসন এবং জেলা আওয়ামী লীগকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, এখন এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আনিসুর মোবাইল ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বগুড়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দুলাল মাদকসহ গ্রেফতার হওয়ায় তাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সচেতন উপজেলাবাসী মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের রাজনীতি থেকে চিরতরে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় সমাজ থেকে মাদক কখনও নির্মূল করা সম্ভব হবে না বলে তারা মন্তব্য করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.