গোয়েন্দা নজরদারিতে ২৫ হাজার ব্যক্তি

২৫ হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহযোগী এবং ফেসবুকের ২ জন অ্যাডমিন ভার্চুয়ালি গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। ২ এপ্রিল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগাম ফাঁসের ঘোষণা দেয়া এসব ব্যক্তির ব্যাপারে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এদের মধ্যে দোষীদের যে কোনো মুহূর্তে গ্রেফতার করা হবে। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম এ তথ্য প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে এবারের এইচএসসির প্রশ্ন আগাম দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। প্রতিটি প্রশ্নের বিনিময়ে তারা এক হাজার টাকা নেবে বলছে। তথ্য পেয়ে অনুসন্ধান করে তাদের চিহ্নিত করেছি। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে তারা ধরা পড়বে। তিনি আরও বলেন, ফেসবুকের ওই গ্রুপের দুই অ্যাডমিন আছে। একটিতে ১৬ হাজার, আরেকটিতে ৯ হাজার সদস্য। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আইন-শৃংখলা বিষয়ক জাতীয় মনিটরিং কমিটির এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ও মো. আলমগীরসহ মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। এতে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা শেখ নাজমুল আলমের বক্তব্য শোনার পর শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব সংশ্লিষ্টদের পাকড়াওয়ের নির্দেশ দেন। এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ফেসবুক থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রমাণ পেলে ওই শিক্ষার্থীর ফল বাতিল করবে সরকার। তাই ফেসবুক অ্যাডমিন বা যারা এর সঙ্গে যুক্ত আছেন যদি তিনি ছাত্র হন তার তথ্যও আমাদের দরকার। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভায় বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করে ধরা হবে। যদি ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক বা স্কুলও হয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র একটি অংশ এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রশ্নের পেছনে না ঘোরার আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আগে বিজি প্রেস থেকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠত। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে বিজি প্রেসে নজর দেয়া হয়। গত তিন বছরে সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া প্রশ্ন বিতরণেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজি প্রেস থেকে প্রশ্নফাঁস হওয়ার প্রমাণ না পাওয়ার কথা পুলিশ কর্মকর্তা শেখ নাজমুল আলমও সভায় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকায় গত দুই মাসে ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন অধ্যক্ষ, তিনজন শিক্ষক, একজন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক এবং ২০ জন ছাত্র, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ভাইবারের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের অ্যাডমিন। তিনি প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ সংক্রান্ত আইনে শাস্তির বিধান আরও কঠোর করার সুপারিশ করেন। এ সভায় পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে গোয়েন্দা সংস্থার একটি ‘ডেডিকেটেড ইউনিট’ কাজ করছে।

No comments

Powered by Blogger.