পদচারী–সেতুর চলন্ত সিঁড়ি ১০ দিন ধরে বন্ধ

পরিচালনাসংক্রান্ত ঝামেলায় ১০ দিন ধরে বন্ধ আছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের নতুন পদচারী-সেতুর চলন্ত সিঁড়ি। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলন্ত সিঁড়িটি বন্ধ করে দিয়েছে এর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হরাইজন্টাল টেকনো লিমিটেড। ফলে রাস্তা পারাপারে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা। হরাইজন্টাল টেকনোর সহকারী ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে আটলান্টিক মেরিন এবং তাদের কাছ থেকে ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ মালিকানা কেনে। আমাদের সঙ্গে পরিচালনা বিষয়ে কোনো চুক্তি নেই। উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিজস্ব লোকবল দিয়ে নিজেদের খরচে আমরা চলন্ত সিঁড়িটি পরিচালনা করে আসছি।’ আহসান হাবিব আরও বলেন, ‘আটলান্টিক মেরিন এবং ডকইয়ার্ডের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। চলন্ত সিঁড়িটি বুঝে নিতে এবং সেটি তাদের লোকবল দিয়ে পরিচালনা করতে অনুরোধ জানানো হয়। একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পরও তারা বুঝে নেয়নি। সিটি করপোরেশনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে এত দিন পরিচালনা করে আসছি। এ মাসে সিটি করপোরেশন, ডকইয়ার্ড এবং আটলান্টিক মেরিনকে চিঠি দিয়ে জানাই যে আমরা আর পরিচালনা করতে পারছি না।’ সেতুটির সহকারী নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান আটলান্টিক মেরিনের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘চলন্ত সিঁড়িটি যারা পরিচালনা করে সেই অপারেটরদের বিল হরাইজন্টাল টেকনো সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে পায়নি, তাই তারা এটি বন্ধ করে দিয়েছে। হরাইজন্টালকে অনুরোধ করেছিলাম জনগণের সুবিধার্থে সেতুটি বন্ধ না করার জন্য, কিন্তু তারা অপেক্ষা না করেই বন্ধ করে দিয়েছে।’
গতকাল শুক্রবার দেখা যায়, চলন্ত সিঁড়িটি বন্ধ থাকায় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে সেতুর নিচ দিয়ে পার হচ্ছে। কেউ হাত উঁচিয়ে, কেউ যানবাহনের সামনে দিয়ে দৌড়ে পার হচ্ছে। বেপরোয়াভাবে সড়ক পার হওয়ায় যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিমানবন্দর এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) আবদুল আলীম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটি চালুর পর থেকে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থাকে। লোকজন আগের মতোই নিচ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। লোকজন নিচ দিয়ে পার হওয়ায় রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। চলন্ত সিঁড়ির বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৭ আগস্ট এটি উদ্বোধনের দিনই সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর থেকে পরিচালনার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু তারা পরিচালনার দায়িত্ব নিচ্ছে না এবং পরিচালনার জন্য যে ব্যয় হচ্ছে, সেটিও বহন বা পরিশোধ করছে না। চলন্ত সিঁড়ির চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ১৪ তারিখ রাতে জানানো হয় লিফট বন্ধ রাখতে। এরপর ১৫ তারিখ সকাল থেকে লিফট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। লিফটের কোনো সমস্যা নেই। আমারে এখন চালু করে দেখাতে বলেন, চালু কইরা দিমু।’ এ বিষয়ে জানতে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা ধরেননি। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে জানা ছিল না। কাল (আজ শনিবার) এটি চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.