যুক্তরাষ্ট্রকে এক নম্বরে দেখতে চাই

আবারও নিজের দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভারে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়েছে। এ অস্ত্রের মজুতের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের এক নম্বরে থাকতে হবে।
গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর এবারই প্রথম ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার নিয়ে কথা বললেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষাৎকারে উত্তর কোরিয়া, ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, মারমুখী আচরণের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া আঞ্চলিক নিরাপত্তায় যে হুমকির সৃষ্টি করছে, চীন উদ্যোগী হলে খুব সহজেই তার সমাধান সম্ভব। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত নিরসনে ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতি’র প্রতিও তিনি সমর্থন জানান। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত এ নীতি থেকে তাঁর সরে যাওয়ার খবর নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ করার ব্যাপারে ট্রাম্প বলেন, তিনি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব দেখতে চান। এ কথা বলার পরই বলেন, ‘তবে পারমাণবিক শক্তির প্রশ্নে আমরা কোনো দেশের থেকেই পিছিয়ে থাকতে রাজি নই, এমনকি তা কোনো বন্ধুপ্রতিম দেশ হলেও।’ গত বছরের ডিসেম্বরে ট্রাম্প একটি টুইট করেছিলেন। এতে তিনি বলেছিলেন, গোটা বিশ্বে এ নিয়ে উপলব্ধি সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভার শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করা উচিত। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবেই ট্রাম্প ওই কথাগুলো বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী সংগঠন প্লাওশেয়ার্স ফান্ডের হিসাবে রাশিয়ার মজুতে ৭ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে ৬ হাজার ৮০০টি। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, স্থলভিত্তিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তার ঘটিয়ে রাশিয়া ১৯৮৭ সালের মার্কিন-রুশ চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত করা এ সমস্যা সমাধানের অনেক উপায়ের একটি। তবে চীন চাইলেই খুব সহজে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি ইস্যুতে ট্রাম্প বলেন, দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতিতে দুই পক্ষের মধ্যে চলমান সমস্যা নিরসনের পক্ষেই আছেন তিনি। তবে উভয় পক্ষ যে সমাধানে সন্তুষ্ট হবে, তেমন একটা সমাধান বের করতে পারলেই তিনি সবচেয়ে খুশি হবেন।
সময়ের আগেই দেয়াল উঠবে
মেক্সিকো সীমান্তে খুব শিগগির দেয়াল নির্মাণ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কংগ্রেসে (সিপিএসি) দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, তিনি পুরো বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করছেন না। কাজেই মার্কিন জনগণ তাঁর বিবেচনায় সর্বাগ্রে থাকবে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দেয়ালটা নির্মাণ করছি। আসলে এর কাজ খুব শিগগির শুরু হবে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই।’
হোয়াইট হাউসকে প্রত্যাখ্যান
ইউএসএ টুডে জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগীদের যোগাযোগের যে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, তা নাকচ করে দিতে হোয়াইট হাউসের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাসহ (এফবিআই) অন্যান্য গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। মার্কিন এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্পের সহযোগীরা রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছিলেন বলে চলতি মাসের প্রথম দিকে নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করে। হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস খবরগুলো নাকচ করে দিতে এফবিআইসহ অন্যান্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁর অনুরোধে সাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

No comments

Powered by Blogger.