গাবতলী বাস টার্মিনালে হকারদের দৌরাত্ম্য, পরিবেশ নোংরা

গাবতলী বাস টার্মিনালে অবৈধ দোকান ও হকারদের দৌরাত্ম্য কমেনি। বিশ্রাম ও টয়লেট-সুবিধায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট হলেও মালপত্র নিয়ে টানাটানিতে তাঁরা বিরক্ত। আর টার্মিনালের পরিবেশও খুব নোংরা। রাজধানীর অন্যতম বড় বাস টার্মিনাল গাবতলীতে। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার বাস চলাচল করে। গতকাল শুক্রবার দেখা যায়, গাবতলী টার্মিনালের সামনের ও ভেতরে স্থায়ী দোকানগুলো ছাড়াও অনেক অবৈধ দোকান ও হকার বসেছেন। ভেতরে চলার পথের পাশেই তাঁরা বসেছেন নানা পসরা সাজিয়ে। মো. হাসান নামের এক হকার টার্মিনালে ঢোকার মুখেই জুতার দোকান নিয়ে বসেছেন। অনুমতির বিষয়ে বলেন, অনুমতি লাগে না। মাঝে কর্তৃপক্ষ এসে তুলে দেয়, কিন্তু তেমন ঝামেলা হয় না। তবে হাসান আরও বলেন, অনেক কুলিই এখানে হকার হিসেবে বসেন বা অন্য লোক দিয়ে বসান। বাস এসে থামলেই যাত্রীদের মালামাল নিয়ে কুলিদের টানাটানি শুরু হয়ে যায়। নির্দিষ্ট মজুরির হারও মানা হয় না। আয়নাল হক নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ভিড় একটু বেশি থাকলে ব্যাগ ধরে টানাহেঁচড়া শুরু হয়। মজুরির তালিকা থাকলেও ওরা বেশি চায়।’ আরও কয়েকজন যাত্রী বলেন, আগে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারের লোকজন টানাহেঁচড়া করত। এখন কিছুটা কমেছে। তবে ঈদের সময় তাদের তৎপরতা বেড়ে যায়। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ২০১৪ সালে এ টার্মিনালে একটি টয়লেট নির্মাণ করা হয়। গতকাল দেখা যায়, শৃঙ্খলা মেনেই সবাই এটি ব্যবহার করছেন। ভেতরে পরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধ না থাকায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট। এ ছাড়া মেয়েদের জন্য এখানে স্যানিটারি ন্যাপকিন-সুবিধা আছে। একটি ন্যাপকিন ১০ টাকা। টয়লেটের টিকিট বিক্রেতা রুমি আক্তার বলেন,
প্রতিদিন এখানে পাঁচ শ মানুষ আসে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারে বেশি ভিড় হয়। বিশ্রামাগার নিয়েও যাত্রীদের অসন্তোষ নেই। দেখা গেল পুরো টার্মিনাল আবর্জনায় ভর্তি। খাবারের প্যাকেট, ফলের খোসা, সিগারেটের প্যাকেট, ছেঁড়া টিকিট ছড়ানো-ছিটানো। ভ্যানপট্টি নামের জায়গায় বানানো কাউন্টারগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। ভাঙা আসবাব ফেলে রাখা। ভবঘুরেরা ঘুমাচ্ছে। এই অংশটি বেশি নোংরা। বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে। টার্মিনালের দেয়ালঘেঁষা ফুটপাত ব্যবহারের অনুপযোগী। মানুষ প্রস্রাব করছে, শুকনা গাছের ডাল ফেলে রাখা ও দুর্গন্ধ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এ টার্মিনালের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. জোসান আলী প্রথম আলোকে বলেন, টানাহেঁচড়ার ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তাঁরা পরিবহন মালিক সমিতিকে অবহিত করেন। কুলিরা যাতে বেশি মজুরি আদায় না করতে পারেন, সে জন্য মজুরির তালিকা টাঙিয়েছেন টার্মিনালের বিভিন্ন জায়গায়। পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জোসান আলী বলেন, তাঁদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী কম থাকায় কিছু সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ২১২টি ‘টোকেন’ দোকানের অনুমতি দিয়েছেন। হকারদের উচ্ছেদ করা হবে বলে জানালেন।

No comments

Powered by Blogger.