মিরপুরের অনেক এলাকায় গ্যাস ছিল না

মিরপুরের অনেক স্থানেই গত বৃহস্পতিবার গ্যাস ছিল না। বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থানে গ্যাস না থাকার কথা মাইকে প্রচার করা হয়। তবে যেসব এলাকায় প্রচার করা হয়নি, সেসব স্থানেও গ্যাস ছিল না বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। সন্ধ্যার আগেই গ্যাস আসার কথা বলা হয়, কিন্তু মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনসহ অনেক এলাকার বাসাবাড়িতে রাত নয়টায়ও চুলায় পুরো আঁচ ছিল না। এলাকা ঘুরে এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানি জানায়, অনিবার্য কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইন সংস্কারের জন্য মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত সড়কের দুপাশের কিছু এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে আট ঘণ্টা গ্যাস না থাকার ঘোষণা ছিল। তবে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জানা যায়, অনেকেই মাইকিং শুনতে পাননি। আবার অনেক এলাকায় আদৌ মাইকিং হয়নি, অথচ দিনভর গ্যাস ছিল না। পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দা বড় ধরনের সমস্যায় পড়েন। অনেকে হোটেল থেকে খাবার সংগ্রহ করেন। কোনো কোনো বাসিন্দা বিকল্প ব্যবস্থায় রান্না করেন। মিরপুর ১৩ নম্বর এলাকায় মাইকে গ্যাস না থাকার কথা প্রচার করা হয়। কিন্তু ১৪ নম্বরের কাফরুল থানার বিপরীত দিকে রোটারি স্কুলের আশপাশের এলাকায় বাসিন্দারা জানান, সেখানে প্রচার হয় না। তাই সকাল থেকে গ্যাস না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় অনেক পরিবারকে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ নির্মিত ৩০টিরও বেশি বহুতল ভবন রয়েছে সেখানে। একটি ভবনের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা পারভিন সুলতানা বলেন, সকালে চা করার পরই চুলায় আঁচ কমতে থাকে। ১০টার দিকে একেবারেই চলে যায়। আগের রাতের ঠান্ডা ভাত ছিল ফ্রিজে।
পানি দিয়ে ‘পান্তা’ হিসেবে স্বামী ও এক সন্তানকে নিয়ে খেয়েছেন। অপর একজন গৃহিণী রীতা সাহা রাইস কুকারে ভাত আর আলু সেদ্ধ করে দুপুরে কোনোভাবে খাওয়ার কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু রাত আটটার পরও চুলায় আগুন জ্বলেনি। গতকাল শুক্রবারও একই অবস্থা হবে, এমন আশঙ্কায় তিনি ভোরে উঠেই মাছ-ভাত রান্না করেন বলে জানান। অপর একটি বহুতল ভবনের মালিক খায়রুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে চা চাইলে তাঁর স্ত্রী জানান, চুলা জ্বলছে না। পরে নাশতা এবং দুপুরের খাবারও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তিনি এলাকার একটি হোটেল থেকে খাবার সংগ্রহ করেন। তবে গ্যাস না থাকায় এবং বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অনেক হোটেলেও রান্না হয়নি বলে জানা গেছে। পূর্ব শেওড়াপাড়ার অনেক বাড়িতে গ্যাস না থাকার অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। তবে সেখানে মাইকে প্রচার হয়েছে। কাজীপাড়ার ইটখোলা বাজার এলাকায় গ্যাসের অভাবে বড় সমস্যায় পড়েন এলাকাবাসী। বিকল্প উপায়ে রান্নাবান্না করছেন বাসিন্দারা। গ্যাসের স্বল্প চাপের জন্য অনেক বাড়িতে কেরোসিনের চুলা (স্টোভ) কেনা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার গ্যাস না থাকায় সেসব চুলার ব্যবহার হয় বলে জানা গেছে। যোগাযোগ করা হলে তিতাস গ্যাস কোম্পানির জরুরি নিয়ন্ত্রণ বিভাগ থেকে বলা হয়, ভূগর্ভস্থ গ্যাস পাইপ সংস্কার করতে গিয়ে কিছু সরবরাহ পাইপ বন্ধ রাখতে হয়েছে। এর প্রভাব অন্য এলাকায়ও পড়ে থাকতে পারে। তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে মাইকিং করে বা সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার করার।

No comments

Powered by Blogger.