জার্মানিসহ বিশ্বসম্প্রদায়ের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পরিবেশে অস্থায়ী আবাসন তৈরিতে জার্মানিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন। গতকাল শনিবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজসভায় তিনি এই আহ্বান জানান বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমকে উদ্ধৃত করে বাসস জানায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে বলেন, মিয়ানমারের মূলধারা থেকে বাদ পড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়টিকে বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিয়েছে। কিন্তু কক্সবাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহরে তাদের অবস্থান ও তৎপরতার কারণে পরিবেশ, পয়োনিষ্কাশন ও প্রকৃতি বিপর্যস্ত হচ্ছে, যা তাদের অমানবিক পরিবেশে বাস করতে বাধ্য করছে। তাই সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে তাদের একটি খোলামেলা ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সরিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ সরকার। এক ঘণ্টার আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে দুই নেতা ব্যবসা-বাণিজ্য, উন্নয়ন ও শরণার্থী প্রসঙ্গসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। আলোচনা শেষে বাংলাদেশের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের আধুনিকায়নে বাংলাদেশ ও জার্মানি একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশকে ৫০ লাখ ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করবে জার্মানি। এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদ দমনে রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণায় সই করে দুই দেশ। ওই ঘোষণা অনুযায়ী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ ও জার্মানি কর্মসূচি নেবে এবং রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চালাবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, শেখ হাসিনার দেওয়া আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরে আগ্রহ দেখিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। জার্মানির চ্যান্সেলর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় হওয়ার ব্যাপারেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অংশীদারির মাধ্যমে ব্যবসার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমন্ত্রণ জানান। আলোচনায় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক, স্বরাষ্ট্রসচিব কামালউদ্দিন আহমেদ ও জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ৫৩তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শুক্রবার থেকে জার্মানিতে রয়েছেন। এই সফর শেষ করে আজ রোববার রাতে তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.