রিকশা প্রিন্ট, শখের হাঁড়ি বৈশাখী পোশাকে by মানসুরা হোসাইন

আর মাত্র তিন দিন পরেই বাংলা নতুন বছর৷ সবাই নতুন জামা-শাড়ি কিনছেন
বৈশাখ বরণ করতে৷ এবার বাজারে অঞ্জন’স ​এনেছে রিকশা প্রিন্টের শাড়ি
পাড় এবং ওপরের দিকের অংশটুকুতে কমলা, হলুদ, সবুজ দিয়ে নকশা করা। জমিন পেস্ট রঙের। তবে যেমন-তেমন নকশা নয়, একেবারে রিকশা প্রিন্টের নকশা। রিকশার ওপরের দিকে যেমন ঢেউখেলানো ঝালর থাকে, ঠিক সেই রকম করে শাড়ির আঁচলেও ঝালর। সঙ্গে আছে ব্লাউজের কাপড়। ইস্টার্ন ব্যাংকে কর্মরত পৌলমী ভট্টাচার্যের গায়ে শাড়িটা কেমন দেখা যাবে, তা বিভিন্নভাবে দেখাচ্ছিলেন বিক্রয়কর্মী। তাই দেখে মিরপুর থেকে আসা কলেজশিক্ষক তাহমিনা ইসলাম অনেকটা আঁতকে উঠলেন। শাড়িটা কি হাতছাড়া হয়ে গেল? গতকাল শনিবার দুপুরে এ চিত্র দেখা গেল রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে দেশী দশের অঞ্জন’স-এ। তাহমিনা ইসলাম জানালেন, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে সালোয়ার-কামিজ কেনা হয়েছে। একটি ম্যাগাজিনে রিকশা প্রিন্টের এ শাড়ি দেখেই কিনতে এসেছেন। বিক্রয়কর্মী সাদ্দাম হোসেন জানালেন, এবারের বৈশাখের মূল আকর্ষণ এ রিকশা প্রিন্টের শাড়ি। আরও আছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, রিকশা প্রিন্টের সালোয়ার-কামিজ। এবার রিকশা প্রিন্টের পোশাকের স্টক তলানিতে ঠেকেছে। সাদ্দাম হোসেন বিভিন্ন বয়সী ক্রেতার ভিড় সামলাতে সামলাতেই বললেন, ‘এইবার তো দেখি ঈদের মতন অবস্থা। দম ফেলার টাইম নাই।’ সপ্তাহ খানেকও সময় হাতে নেই। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে ছিল ভিড়। বিশেষ করে দেশীয় পোশাকের দোকানগুলোতেই ভিড় বেশি ছিল। আর পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ক্রেতারা খুঁজছেন নতুন কিছু। বৈশাখের লাল-সাদার পাশাপাশি নিজেকে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপনের জন্য অন্য রঙের পোশাকও কিনছেন অনেকে। এবার কামিজের ঝুল একটু বেড়েছে। আবার কোনোটার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম না মেনেই তা করা হয়েছে আঁকাবাঁকা। কোনোটার হাতা ঢিলা তো বডি ফিটিং। পাজামার ক্ষেত্রে কেউ পালাজো পছন্দ করেন, আবার কেউ প্যান্ট কাট। আবার কারও পছন্দ চুড়িদার। গতকাল দেশী দশের বিবিয়ানায় বৈশাখের শাড়ি কিনতে এসেছিলেন জাতীয় দলের কুস্তি খেলোয়াড় শিরিন সুলতানা, নারী জাতীয় দলের ফুটবল কোচ রেহানা পারভীন এবং জাতীয় দলের রেফারি জয়া চাকমা। রেহানা পারভীন বলেন, ‘এইবার বৈশাখ উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসগুলো অনেক বৈচিত্র্য নিয়ে এসেছে।’ বিবিয়ানার পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে তাস খেলার বিভিন্ন আকৃতির কার্ডের ব্যবহার ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। বিশ্বরঙ-এর স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা জানালেন, এবার বৈশাখ উপলক্ষে গ্রাম-বাংলার শখের হাঁড়িকে কনসেপ্ট হিসেবে নেওয়া হয়েছে। হাঁড়ির বিভিন্ন মোটিভ ব্যবহার করা হয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পার্স, লিপস্টিকের ঢাকনাসহ বিভিন্ন জিনিসে। কে ক্রাফটের উদ্যোক্তা এবং পরিচালক খালিদ মাহমুদ বলেন, শুধু বৈশাখের উৎসবে নয়, পরেও যাতে পোশাকটি ব্যবহার করা যায় তার জন্য এবার লাল, সাদার সঙ্গে অন্য উজ্জ্বল রং ব্যবহার করা হয়েছে। আর পয়লা বৈশাখে অনেকটা সময় বাইরে কাটাতে হয়, তাই আরাম ও দামের কথা চিন্তা করে সুতি কাপড় প্রাধান্য পেয়েছে। শুধু পোশাক দিয়ে তো আর উৎসবের সাজ হবে না, তাই ক্রেতারা নতুন ধরনের গয়নাও খুঁজছেন।

No comments

Powered by Blogger.