জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে আসছে ইকুয়েডরে

জাপানের মিনামিয়াসো শহরে ভূমিকম্পের কারণে ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত
কয়েকটি বাড়ির কাছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধারকাজ
শনিবার আঘাত হানা শক্তিশালী ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ধকল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইকুয়েডর। ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে বলে গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। এদিকে, জাপানে ভূমিকম্পের আঘাতে গৃহহীন হয়ে পড়া লোকজনকে আশ্রয় দিতে খুলে দেওয়া হয়েছে কারাগার। ইকুয়েডরের ভূমিকম্পে গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির নিশ্চিত সংখ্যা বেড়ে ৪১৩-এ দাঁড়িয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত হয়েছে অন্তত আড়াই হাজার। এ ছাড়া ১৫ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে রাত যাপন করছে ১৮ হাজার মানুষ। গতকাল ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে সেরানো বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় উদ্ধার তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় ঋণদাতারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৬০ কোটি জরুরি ঋণ সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া চীনা ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গেও দুই শ কোটি ডলারের সহজ শর্তের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তবে একটি এলাকায় উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মার্কো বোরহা বলেছেন, ধ্বংসস্তূপগুলোর নিচ থেকে ভেসে আসা গন্ধই বলে দিচ্ছে, জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। এদিকে, পরপর দুই শক্তিশালী ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়ে পড়া ব্যক্তিদের আশ্রয় দিতে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুমামোতো এলাকায় খুলে দেওয়া হয়েছে কারাগার। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও শনিবার রাতে ৬ দশমিক ৪ ও ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কিউশু দ্বীপ। তবে পরে মাত্রা কমিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রিখটার স্কেলে প্রথমটি ৬ দশমিক ২ আর দ্বিতীয়টি ৭ মাত্রার ছিল। এ ছাড়া গত সোমবার কুমামোতো এলাকায় আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূকম্পন। গত বৃহস্পতিবারের পর এ পর্যন্ত প্রায় ছয় শ পরাঘাতে (ভূকম্পন-পরবর্তী কম্পন) কেঁপে উঠেছে আক্রান্ত এলাকাগুলো। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাপানে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে সহস্রাধিক, যাদের ২০৮ জনের অবস্থা গুরুতর।কুমামোতো স্থানীয় সরকারের মুখপাত্র তাকায়ুকি মাৎসুশিতা জানিয়েছেন, প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। জাপানের বিচার বিভাগীয় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কোইচি শিমা জানিয়েছেন, কুমামোতো এলাকায় গৃহহীন হয়ে পড়া ব্যক্তিদের জন্য একটি কারাগার খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই শ মানুষের এ কারাগারে মঙ্গলবার প্রায় পাঁচ শ কয়েদির সঙ্গে ১১০ জন গৃহহীন রাত যাপন করেছে।

No comments

Powered by Blogger.