মির্জা ফখরুলের সদিচ্ছা

গত মঙ্গলবার দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পৌর নির্বাচন তদারকির জন্য গঠিত দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ সেলের সভা শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৌরসভা নির্বাচনে মাঝপথ থেকে সরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে যে মন্তব্য করেছেন এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় থাকার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে দলের সদিচ্ছাই প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে সরকারি মহল থেকে কেউ কেউ এমন বক্তব্যও দিয়েছিলেন যে বিএনপি শেষ পর্যন্ত পৌর নির্বাচনে থাকবে না এবং যেকোনো অজুহাতে তারা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপাবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সর্বশেষ বক্তব্যে যদি তাঁর দল স্থির থাকে, তাহলে দেশবাসী একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পৌর নির্বাচন পাবে সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটাই কি যথেষ্ট? এটি স্থানীয় সরকার সংস্থার একটি নির্বাচন হলেও বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ চায় নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।
নির্বাচনটিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে যেমন বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব আছে, তেমনি সেই নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে কি না, সেটি অনেকটাই নির্ভর করছে ক্ষমতাসীন দল, জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সাংসদেরা জড়িত বলে অভিযোগ এসেছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। দীর্ঘ সাত বছর পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী রাজনীতিতে মুখোমুখি হচ্ছে। এটি দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছে। সবার প্রত্যাশা, এই নির্বাচনে ভোটাররা নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে এবং পছন্দসই প্রার্থী বেছে নিতে পারবেন। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠু হলে সেটি দেশের চলমান রাজনীতিতেই কেবল ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না, আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথও উন্মুক্ত করবে আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.