‘ইসলামের সমালোচনা অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা হুমকি হতে পারে’

ইসলাম নিয়ে সমালোচনা অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এই বলে রাজনীতিবিদদের সতর্ক করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশন (এএসআইও) প্রধান ডানকান লুইস। ক্ষমতাসীন রক্ষণসীল দল থেকে রাজনীতিকদের কেউ কেউ সম্প্রতি ইসলাম নিয়ে সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবস গত সপ্তাহে ইসলাম নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা বলেন। এরপরই ডানকান লুইস ওই সতর্কবার্তা দিলেন রাজনীতিকদের। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, গত সপ্তাহে টনি অ্যাবট একটি পত্রিকার কলামে লিখেছেনÑ ইসলামের বিরাট সমস্যগুলোর বিষয় আমরা আর অস্বীকার করতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলার পর পরই এমন মন্তব্য করেন টনি অ্যাবট। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে তার দলের অনেক নেতা, ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেট, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, প্রেসিডেন্ট পদে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মানুষ। ট্রাম্পের সঙ্গে টনি অ্যাবট সুর মেলানোয় অস্ট্রেলিয়ার লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এএসআইও’র প্রধান ডানকান। তিনি তাদেরকে অনুরোধ করেছেন, ইসলাম নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা না করে সুর নরম করুন। তার আহ্বানের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়া বিশপ। তিনি বলেছেন, এএসআইও’র মহাপরিচালক যদি এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকেন যে, প্রকাশ্যে কথা বলার জন্য তা তার প্রতিষ্ঠানের সন্ত্রাস বিরোধী কাজে ব্যাঘাত ঘটায় তাহলে তিনি সে বিষয়ে কথা বলতেই পারেন। উল্লেখ্য, টনি অ্যাবট নিয়মিতভাবে কট্টরপন্থি গ্রুপ ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বলছেন। ওদিকে সম্প্রতি সিডনির ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে একটি সাক্ষাতকার দেন ডানকান লুইস। এতে তিনি বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে উত্তেজনা উস্কে দিলে তাতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হয়ে পড়বে। আমি বিশ্বাস করি কাউকে এভাবে কোন কিছু দিয়ে আঘাত করলে তা হবে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। মুসলিমদের কাছ থেকে আমরা অনেক তথ্য পাই এবং তার ওপর আমাদেরকে অনেক বেশি নির্ভর করতে হয়। তাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমুলক কথা বললে আমাদের কর্মকা-ে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাই যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানযোগ্য। তবে সেক্ষেত্রে আমাদেরকে স্মার্ট হতে হবে। উল্লেখ্য, জিহাদি গ্রুপে যোগ দিতে ইরাক ও সিরিয়া যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার কট্টরপন্থি ও নাগরিকরা এমন উদ্বেগের মুখে গত এক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিম বিরোধী সেন্টিমেন্ট বাড়ছে। ইসলাম নিয়ে বিরোধিতার কারণে এই ধারা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কট্টরপন্থিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছেই। এক্ষেত্রে এখনই বিজয় ঘোষণা করতে চান না ডানকান লুইস।

No comments

Powered by Blogger.