নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন

পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন স্থানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। অথচ রিটার্নিং কর্মকর্তারা এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে শৈথিল্য দেখিয়ে চলেছেন। যে দেশে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা হরহামেশা বিধিবিধান লঙ্ঘন করে থাকেন, সে দেশে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এহেন আচরণ দুর্ভাগ্যজনক। বলতে গেলে কোনো নির্বাচনেই কমিশনকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তারা ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ ধরনের নীতি নেওয়ায় অর্থ ও ক্ষমতার জোরই নির্বাচনে প্রাধান্য পাচ্ছে। খবর ছাপা হয়েছে যে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইসি ১৭ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। অথচ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা অব্যাহতভাবে প্রতিটি জেলায় নির্বাচনী দপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার ছিলাম এবং তা পর্যায়ক্রমে অর্জিত হয়েছে। দেশের সর্বত্র ইসির নিজস্ব প্রশাসন বিস্তৃত রয়েছে।
কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে জনপ্রশাসনের সদস্যদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। এখন আবার দেখা যাচ্ছে ইসি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরেজমিন প্রতিবেদন বাদ দিয়ে গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা গুরুতর প্রশ্নবিদ্ধ। দেশবাসী দেখতে চায় যে, নির্বাচন কমিশন প্রার্থী বা নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্বিশেষে যাঁরাই নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী যথাবিহিত পদক্ষেপ নেবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য কতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইসি কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটাও জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। নিয়ম রক্ষার চিঠি দিয়েই ইসি দায়িত্ব শেষ করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের স্মরণ রাখা উচিত, তাদের সামর্থ্যহীনতার বিষয়টি দেশের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপকভাবে আলোচিত। সম্প্রতি ডিএফআইডির প্রতিবেদনেও তা প্রতিফলিত হয়েছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.