‘দোষ স্বীকার করিনি, এটর্নি জেনারেলের বক্তব্য অজ্ঞতাপূর্ণ’ -খন্দকার মাহবুব

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী দোষ স্বীকার করেছেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।
আজ বুধবার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে আপিলের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আদালতে আমার সর্বশেষ বক্তব্য ছিল মাওলানা নিজামী সরাসরি কোনো ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন এটা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। এরপরও যদি সাক্ষ্য প্রমাণের কোনো ধারায় তাকে দোষীসাব্যস্ত করা হয় তাহলে তার বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে যেন দণ্ড মওকুফ করা হয়। তিনি বলেন, বেশিরভাগ চার্জেই তাকে খালাস দেয়া সম্ভব। মাওলানা নিজামীর আইনজীবী দোষ স্বীকার করেছেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, জামায়াত ও জামায়াতের সদস্য হিসেবে মাওলানা নিজামী অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাস করতেন। এই বিশ্বাসে তারা পাকিস্তানকে তখন রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও লুটের অভিযোগ আনা হয়েছে। এরকম চারটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলার সাক্ষীদের দীর্ঘদিন সেফহোমে রেখে শিখিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেয়া হয়েছে। তার প্রমাণ তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দীতে যা বলেননি, আদালতে এসে তা বলেছেন। ’৭১ সালে মাওলানা নিজামীর মতো ১৯ বা ২০ বছরের একজন ছেলের পক্ষে পাকিস্তান আর্মিকে কমাণ্ড করার ক্ষমতা ছিল না। ’৭১ সালের ২৬ মে আল-বদর গঠন করা হয়েছে। ওই তারিখের আগের দুটি ঘটনায় তাকে আল বদরের কমান্ডার বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমরা বলেছি, ৩০ সেপ্টেম্বরের পর তিনি ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন না। ’৭১ সালে পাকিস্তান আর্মি কোনো এলাকায় গেলে পুলিশকে খবর দিয়ে যেত। নিজামী তখন পাকিস্তান আর্মিকে পথ দেখিয়েছেন এটা হাস্যকর কথা।
খন্দকার মাহবুব বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যায় তিনি (নিজামী) জড়িত ছিলেন না। নিজামী সাহেব ওই সময়ে একজন যুবক ছিলেন। আলবদর বাহিনীর হয়ে একজন যুবক এত মানুষকে হত্যা করেছেন এমন কোনো তথ্য প্রসিকিউশন দিতে পারেনি। আদালতে বলেছি, আমাদের দৃষ্টিতে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন। আদালত যদি মনে করে দোষী তাহলে নিজামীর বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় সর্বোচ্চ দণ্ড কমাতে পারেন। ফৌজদারি মামলায় এ আবেদন করার সুযোগ সব সময় থাকে। তবে এর অর্থ এ নয় যে আইনজীবীরা দোষ স্বীকার করে মৃত্যুদণ্ড কমানোর আবেদন করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.