১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা সন্তু লারমার

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করতে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে হরতাল অবরোধ, অফিস আদালত বর্জন, ভূমি অধিগ্রহণ ও পর্যটন প্রতিরোধসহ ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
শান্তি চুক্তির দেড়যুগ পুর্তি উপলক্ষে ২ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে রাঙ্গামাটিতে জনসংহতি সমিতি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। সমাবেশে দ্রুত শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
শান্তিচুক্তির বর্ষপূর্তিতে জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে প্রতিবছরের মতো এবারও গণসমাবেশের আয়োজন করা হয় রাঙ্গমাটিতে। রাঙ্গামাটির জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই গণসমাবেশে তিন পার্বত্য জেলা থেকে হাজার হাজার উপজাতীয় নারী পুরুষ যোগ দিয়েছেন। এতে রাঙ্গামাটি শহরে সকাল থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশে বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, বাংলাদেশ কমিউনিস্টি পার্টির চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেনসহ পাহাড়ি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ জানুয়ারি থেকে চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের মধ্যে যারা জনস্বার্থ পরিপন্থী কাজে যুক্ত রয়েছে তাদের বয়কট করা, তাদের রাজনৈতিকভাবে বর্জন, চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষে হরতাল, অবরোধ, অর্থনৈতিক অবরোধ, পর্যটন কাজে বিরোধীতা করা ও সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত অফিস বর্জন করা ইত্যাদি।
সমাবেশে সন্তু লারমা অভিযোগ করেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের নামে গত আঠারো বছরে কেবল টালবাহানাই হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়েও জুম্ম জনগণ মুক্তি লাভ করেনি। সরকার যে সমস্যার জন্ম দিয়েছে তার সমাধান সরকারকেই করতে হবে।
সন্তু লারমা বলেন, জেলা পরিষদ দলীয়করণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। মিথ্যা মামলা ও দমন নিপিড়ন করে চুক্তি বিরোধী সরকারী কার্যক্রম অব্যাহত ভাবে রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এসময় সমাবেশে রাজনৈতিক এবং পাহাড়ি নেতারা পার্বত্য এলাকার বর্তমান অসহনীয় পরিস্থিতি দূর করতে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষণা করে সময় নিযর্ধারণের জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন।
সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জনসংহতি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

No comments

Powered by Blogger.