সিরিয়দের জন্য আমেরিকায় 'মুসলিম শহরের' দরজা খোলা

মিশিগানের হ্যামট্রাম্ক শহরটি আমেরিকায় 'মুসলিমদের শহর' বলেই পরিচিত। কারণ এখানকার বাসিন্দাদের বেশিরভাগই মুসলমান এবং অভিবাসী। যারা এসেছেন বাংলাদেশ, ইয়েমেন ও বসনিয়া থেকে। শহরটিতে মোট জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ মুসলমান।
যে দেশে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সিরিয়া শরণার্থীদের অবজ্ঞার চোখে দেখছে, অথচ সেখানকার এই ছোট্ট শহরের বাসিন্দারা হাসিমুখে সিরিয় শরণার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন।
হ্যামট্রাম্ককে বলা হতো 'দুই বর্গ কিলোমিটারের পৃথিবী'। যেখানে ২২ হাজার বাসিন্দার বসবাস।
এক সময় শহরটিতে ৯০ শতাংশ পোলিশ ক্যাথলিক বসবাস করতেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এটি এখন 'মুসলিমদের শহরে' রূপান্তরিত হয়েছে। কাউন্সিলে মুসলমানদের সংখ্যাই বেশি। মসজিদগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আযান ধ্বনিত হয়।
সর্বশেষ আদমশুমারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আরবদের সংখ্যা ২৩ শতাংশ, বাংলাদেশী ১৯ শতাংশ এবং বসনিয়া ও অন্যান্য মুসলিম প্রায় নয় শতাংশ।
সম্প্রতি সেখানে যুক্ত হয়েছেন ৩৩ জন সিরিয়। তারা মুসলমান এবং সন্তানদের নিয়ে শরণার্থী পরিবারগুলো দেশ থেকে পালিয়ে এখানে এসেছে।
সিরিয়ার শরণার্থীরা দেশটিতে এসে প্যারিসের মতো হামলাতে পারে- এই তুমুল বিতর্কের মধ্যে হ্যামট্রাম্ক কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের জন্য শহরের দরজা খুলে দিয়েছে।
রিপাবলিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বেন কারসন এবং গত সপ্তাহে শরণার্থীদের প্রবেশের ব্যাপারে বিরোধীতাকারী ৩১ জন গভর্নরের মধ্যে মিশিগান গভর্নর রিক স্নাইডার ছিলেন সবার আগে।
অথচ মিশিগানের এ শহরের কর্মকর্তারা জোর গলায় বলেছেন, 'আমাদের শহরের দরজা সিরিয় শরণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।'
৪০ বছরের থায়ের হোসেন সিরিয়ার বাসিন্দা। ২০১২ সালে স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান পরিবার নিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন হ্যামট্রাম্ক শহরে।
বলেন, আমি কখনো মিশিগান ও হ্যামট্রাম্কের কথা শুনিনি। আমার কোনো ধারণা ছিল না এদের সম্পর্কে। কিন্তু যখন এখানে পা রাখলাম বুঝলাম, এরা আমার মতোই। এখানে মসজিদ আছে, প্রায় সবাই আমাদের মতোই কথা বলে। মনে হলো, আমার বাড়িতেই আছি।' 
শহরের মেয়র কারেন মাজেস্কি বলেন, আসলে কয়টি জনগোষ্ঠী এখানে বসবাস করে, তা কারো সঠিক জানা নাই। সবাইকে স্বাগত জানানো হয় এখানে। জনসংখ্যা বেশি নিয়ে তাদের কোনো দুঃশ্চিন্তা নেই।
সূত্র : ডেইলি মেইল

No comments

Powered by Blogger.