আরাকান আর্মির নেতা রোনিন সোয়ে আসলে কে?

মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কথিত এক নেতা রোনিন সোয়ে’র সঠিক পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল থেকে এসেছেন বলেই পুলিশের ধারণা। পুলিশ মনে করছে বেশ কয়েকমাস আগে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
কিন্তু স্থানীয় সাংবাদিকদের কেউ কেউ বলছেন কথিত নেতা সোয়ের বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। ১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে বসতি গড়েছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। এরপর তিনি রাজস্থলী নতুন বাজার এলাকাতেই স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার একজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। তবে সোয়ে বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলেন এবং বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করেছেন। আরাকান আর্মির কথিত এই নেতার স্ত্রী এবং সন্তানরা এখনো নেদারল্যান্ডসে বসবাস করছেন বলে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক জানতে পেরেছেন।
তবে এই ঘটনার সত্যতা কতটা সে বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, ‘তার কাছে আমরা একটি নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্ট পেয়েছি। এই পাসপোর্ট জেনুইন (আসল) কি-না সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। বাংলাদেশের কোনো কাগজপত্র পাইনি।’
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সোয়ে রাঙামাটির যে এলাকায় থাকতেন সেখানে তিনি ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রাজস্থলীর নতুন বাজার এলাকায় সোয়ে’র একটি সুন্দর বাড়ি রয়েছে বলে একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ব্যক্তি এতদিন ধরে কিভাবে বাংলাদেশে বসবাস করেছেন? রাঙামাটির পুলিশ সুপার আশা করেন জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সোয়ে’র বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। আজ তাকে রাঙামাটির আদালতে তোলা হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এর আগে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কথিত এক নেতাকে রাজস্থলী নতুন বাজার এলাকা থেকে পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী আটক করে।
পুলিশ দাবি করছে তিনি আরাকান আর্মির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। রাঙ্গামাটিতে অবস্থান করেই সোয়ে আরাকান আর্মির কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন বলে পুলিশ বলছে।
গত অগাস্ট মাসে বান্দরবানের থানচি সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ দলের ওপর হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের পর রোনিন সু সম্পর্কে জানতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর দুদিন পরেই তিনি বসবাস করছেন এমন একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ ও বিজিবি।
অভিযানের সময় রোনিন সুকে না পাওয়া গেলেও তার একজন সহযোগীকে আটক করতে সক্ষম হয় যৌথবাহিনী।
পরে ওই সহযোগী স্বীকার করে যে আরাকান আর্মির সদস্য এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই শেষ পর্যন্ত রেনিন সুকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় সম্ম্প্রতি মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তৎপরতার প্রেক্ষাপটে এই ব্যক্তিকে আটক করা হলো। সূত্র : বিবিসি বাংলা

No comments

Powered by Blogger.