তানোরে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী অবশেষে রামেক হাসপাতালে

রাজশাহীর তানোরে সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় অবশেষে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগে নেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে ওই ছাত্রীকে থানা পুলিশের সহায়তায় রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। এদিকে ধর্ষণ মামলার রফাদফা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। উপজেলার পাঁচন্দর ইউপি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এমন ঘটনা নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার দুবইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলামের ভাতিজা আজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী গত মঙ্গলবার থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বার ঘটনাটি আপোস মীমাংসার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। ওই ছাত্রীর পরিবার গরিব হওয়ায় তাদেরকে আপোস মীমাংসা ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য  বুধবার সারাদিনব্যাপী মুন্ডুমালা পৌর কার্যালয়ে রফাদফা শুরু হয়। উভয়পক্ষের কথা বার্তা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুন্ডুমালা পৌর মেয়র একটি বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ডে উপজেলার কৃষক লীগ সভাপতি জাইদুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন, পাঁচন্দর ইউপির আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক বিজেন্দ্রনাথ, সাবেক ইউপি সদস্য ফয়েজ উদ্দীন, মেয়র রাব্বানীর ভাই, যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম, ধর্ষক আজিম উদ্দীনের মামা, দুবইল স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামসহ বেশ আরও কয়েকজন বোর্ডে গিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার রায় নিয়ে আসেন। তবে থানায় মামলা থাকার জন্য ছাত্রীর পরিবারকে কোন টাকা দেয়া হয়নি বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বোর্ডে যাওয়া কয়েকজন নেতা বলেন, আপোস মীমাংসা করা হয়েছে কিন্তু থানায় মামলা থাকার জন্য ছাত্রীর পরিবারকে কোন টাকা পয়সা দেয়া হয়নি। মামলা তুলে নেবার পর তাদেরকে টাকা দেয়া হবে। তবে উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি জাইদুর রহমান রফাদফার কথা অস্বীকার করেন। আপোস মীমাংসার বিষয়ে দুবইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তার স্ত্রী ধরে আপোস মীমাংসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্ডুমালা পৌর মেয়র আপোস মীমাংসার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি নিজেই ওই ছাত্রীকে থানায় মামলা করতে বলেছি। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আখের আলী বলেন, আপোস মীমাংসার কথা বলতে পারবো না। থানায় মামলা হয়েছে ওই ছাত্রীকে গতকাল রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বিষয়টি আরও জানা যাবে। এ ব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষক আজিম উদ্দীন যেখানেই থাক তাকে গ্রেপ্তার করা হবেই।

No comments

Powered by Blogger.