নির্বাচনে থাকার ঘোষণা কাদের সিদ্দিকীর

মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতের রায় পক্ষে না গেলেও দলের প্রার্থী নির্বাচনে থাকবেন।
তিনি আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমরা আগেই জানতাম নির্বাচন কমিশন এরকম কিছু একটা করবে। এজন্য আগেই আমরা এগিয়ে ছিলাম। চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলাম। তাদের দুইজন এখনও আছেন। আদালতের রায় আমাদের পক্ষে না এলে এ দুজনের একজনকে দলীয় প্রার্থী করা হবে।
তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন পর্যন্ত আমরা ব্যাংকের দায়মুক্ত ছিলাম। এরপর ব্যাংক থেকে দায়ের কথা বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনে না গেলে ব্যাংকের ছলনা বুঝতাম না : কাদের সিদ্দিকী
বাংলাদেশ ব্যাংক যে এমন ছলনা করবে নির্বাচনে অংশ না নিলে তা বুঝতাম না। অপরদিকে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্ধন্দ্বিতা না করলে নির্বাচন যে নিরপেক্ষ হবে না সেটিও আজকে তুলে ধরে পারতাম না।
আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম একথা বলেন। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন বাতিলের পর তিনি তার দলীয় সিদ্ধান্ত জানাতে এ সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
ঋণ খেলাপির অভিযোগে জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনের উপ-নির্বাচনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। তবে ওই আসনে তার দল নির্বাচনের মাঠে থাকবে বলে জানান তিনি। আগামী ১০ নভেম্বর এ আসনে ভোট হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, এদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। ভোটাধিকারের জন্য রক্ত দেয়। কিন্তু এখনো ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র এখন অনেক দূরে।
তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের উপর মানুষের আস্থা নেই। বর্তমান সংসদের অধিকাংশ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আইনগতভাবে বলা যায় এরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। জাতি প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন চায়। মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদৌ হতে পারে কি-না, সেটি প্রমাণ করতে নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি ও আমার সহধর্মিনীর মনোনয়ন বাতিল করে সরকার একটি বড়ো সুযোগ হাতছাড় করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তার প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ছলনার আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এতে করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সন্মান ক্ষুণ্ণ হয়ে বলে আমি মনে করি।
কাদের সিদ্দিকীর দাবি, অগ্রণী ব্যাংকের যে ঋণের জন্য তাকে খেলাপি হিসেবে অভিযুক্ত করে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে সে অভিযোগ সত্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রমাণাধি তুলে ধরেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, যেদিন আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি, তার পরদিন পর্যন্ত ব্যাংকের কাগজে ঋণখেলাপি ছিলাম না। কিন্তু এরপরেও অগ্রণী ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখা ঋণখেলাপি বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি চিঠি দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা পরে নির্বাচন কমিশনের কাছে সে চিঠি দেয়। এভাবে আমার ও আমার স্ত্রীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।’
তিনি আরো জানান, তার প্রার্থিতা যে বাতিল হবে তা জেনেশুনেই কি চারজনের মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তিনি বলেন, এমন কিছু হতে পারে, আমাদের মনে সন্দেহ ছিল। এ জন্য চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের প্রার্থী কাদের সিদ্দিকীর প্রার্থীতা ঋণ খেলাপির অভিযোগে বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এর বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। কমিশন ১৮ অক্টোবর কাদের আপিল খারিজ করে দেয়।
প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবেন বলে জানান বঙ্গবীর।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.