ঐক্যের ডাক সু চির

রাখাইন রাজ্যের থ্যানদোয়ে শহরে গতকাল নির্বাচনী
সমাবেশে বক্তব্য দেন অং সান সু চি। রয়টার্স
সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে বিপর্যস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানালেন বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি। সু চির এই নির্বাচনী সফর রাখাইন রাজ্যের সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের। সু চি গতকাল শনিবার সেখানকার থ্যানদোয়ে শহরে সমাবেশে বক্তব্য দেন। এখানেই ২০১৩ সালে দাঙ্গায় অন্তত ছয়জন মুসলিম প্রাণ হারান। তবে সেই দাঙ্গা নিয়ে গতকালের সমাবেশে কোনো কথা বলেননি সু চি। তিনি বলেন, জাতিগত ও ধর্মীয় বঞ্চনার হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করা জরুরি। এ দেশের সব মানুষকে এক হতে হবে। একে অপরের প্রতি ঘৃণা ও ভীতি কোনো সুফল বয়ে আনে না। ২০১২ ও ২০১৩ সালে বিভিন্ন সময় রাখাইন রাজ্যে কট্টর বৌদ্ধরা স্থানীয় মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালায়। এখনো পর্যন্ত সেখানে নানা বৈষম্যের শিকার মুসলিমরা। রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন চললেও এ বিষয়ে হতাশাজনক নীরবতার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়েন সু চি। কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা সু চিকে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে মনে করে।
 নির্বাচনের আগে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের না চটানোর নীতিই সু চির নীরবতার কারণ বলে মনে করা হয়। সমাবেশে সু চি স্থানীয় মুসলিম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। সু চির দল ক্ষমতায় এলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে কী করবে এমন প্রশ্ন করেন এক মুসলিম ব্যক্তি। জবাবে সু চি বলেন, তাঁর দল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। এক বৌদ্ধ ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, এমন গুজব রটেছে যে সু চির দল ক্ষমতায় এলে মুসলিমরা দেশের ক্ষমতা পাবে। এর জবাবে সু চি বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন জাতিগত ও ধর্মীয় সহিংসতাকে উসকে দেবে। গতকাল থ্যানদোয়ে শহর এবং আশপাশের গ্রামগুলো থেকে হাজার হাজার মুসলিম সমাবেশে যায়। সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এবারের নির্বাচনে যে ১ হাজার ১০০ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে, এর মধ্যে একজন মুসলিমও নেই। তবু সমাবেশে আসা মুসলিমদের অনেকেই সু চির প্রতি তাদের সমর্থনের কথা জানায়। এদের একজন ওয়েন নাইং (৪১) বলছিলেন, ‘আমাদের আশা ছোটই। আমাদের সমান অধিকার নেই। আমি আশা করি মা সু চি নির্বাচনে জিতলে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পাব।’

No comments

Powered by Blogger.