সামনে শীতকাল, তাই ফিরে আসছে মানবপাচারকারীরা

বাংলাদেশের মানবপাচারকারীরা আত্মগোপন অবস্থা থেকে আবারো ফিরে আসতে শুরু করেছে৷ সামনে শীতকাল, সাগর শান্ত থাকবে৷ আর এই অবস্থাতে ছোট ছোট নৌকায় মানবপাচার সুবিধাজনক৷ কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় একেই বলা হয় ‘মানব পাচার মৌসুম৷
গত মে মাসে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাচার হয়ে যাওয়াদের গণকবর আবিষ্কার হওয়ার পর, বাংলাদেশের পুলিশ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে গেছে৷ তারপর থেকে চারজন মানবপাচারকারী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন৷ ওদিকে আটক করা হয়েছে কম-বেশি ৮০ জনকে৷ বাকিরাও দেশের অভ্যন্তরে বা দেশের বাইরে আত্মগোপন করেছে৷
পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের শীর্ষ ১১ মানবপাচারকারীর একজন হলেন টেকনাফের দিল মোহাম্মদ৷ তিনিও মালয়েশিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন৷ তবে পাচার মৌসুমকে সামনে রেখে তিনি আবার টেকনাফে ফিরে এলে পুলিশ ১২ই সেপ্টেম্বর তাকে এবং তার এক সহযোগীকে টেকনাফ-এর শাহপরীর দ্বীপ থেকে আটক করে৷
দিল মোহাম্মদ আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী দলের সদস্য৷ তিনি মালয়েশিয়াও ‘ওয়ানটেড৷
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) কবির হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘পাচার মৌসুমকে সামনে রেখে আত্মগোপনকারী আরো পাচারকারী ফিরে আসছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে৷ তাদের আটক করা জন্য আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি৷
তাঁর কথায়, ‘‘শীতকালে শান্ত সাগরের সুবিধা নিয়ে যাতে আবার পাচারকারীরা সক্রিয় হতে না পারে, তার জন্য পুলিশ বিশেষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে৷
পাচার মৌসুমের ব্যখ্যাও দেন তিনি৷ বলেন, ‘‘সাধারণত গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে সাগর উত্তাল থাকে৷ আর মানবপাচার করা হয় ছোট ছোট দেশি নৌকায়৷ ঝুঁকির কারণে তাই তখন নৌকায় মানবপাচার একরকম বন্ধ থাকে৷ হেমন্ত এবং শীতকালে সাগর শান্ত থাকে৷ তাই এই সময়ে সাগর পথে ছোট নৌকায় মানবপাচার বেড়ে যায়৷
প্রসঙ্গত, চাকরির কথা বলে পাচারকারীরা প্রধানত বাংলাদেশের টেকনাফ এবং শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে সাগর পথে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে মানবপাচার করে৷ পরে তাদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করে পাচারকারীরা৷ এভাবে অনেকেই মৃত্যুর মুখে পতিত হন৷
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর তথ্য মতে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে ৯৪ হাজার মানুষকে সমুদ্রপথে পাচার করা হয়৷ এছাড়া চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা ৩১ হাজার৷
সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে

No comments

Powered by Blogger.