‘হাসিমুখে’ শোকাবহ শ্রদ্ধাঞ্জলি! by একরামুল হুদা

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজি মো. সেলিম। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র
সাঈদ খোকন। ছবি: প্রথম আলো
‘কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো’—১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ব্যানারের এক জায়গায় লেখা। এই লেখাটির পাশেই ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের হাসিমুখ ছবি। আরেকটি ব্যানারে বঙ্গবন্ধুসহ সেদিন নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবার ছবি। লেখা ‘শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি’। এর পাশেই ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের হাসিমুখ ছবি। শুধু একটি বা দুটো ব্যানারে নয়। ছড়িয়ে আছে এমন অসংখ্য ব্যানার যেখানে শোক দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং বাণীর পাশে নেতা-কর্মীদের হাসিমুখ ছবি। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, নেতা-কর্মীরা কি শোক দিবসের মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারেন না, নাকি নিছক প্রচারের জন্য এই আয়োজন যেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে শোক দিবসকেও।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর জিরো পয়েন্ট, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে, পলাশী মোড় ও আজিমপুরে এমন অন্তত ১০০টি ব্যানার রয়েছে। আছে এমন পোস্টারও। এ সব ব্যানার ও পোস্টারে হাসিমুখে শোক দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি বায়জিদ আহম্মেদ খান, আওয়ামী প্রজন্ম লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সারোয়ার রহমান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ও ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজি মো. সেলিমসহ আরও অনেক নেতা-কর্মী। সব ব্যানারেই বঙ্গবন্ধু ও এসব নেতার ছবি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় অনেক নেতার ছবি আছে। আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও। একটি ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীরও হাসিমুখের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।  এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাঈদ খোকন ও ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট তাঁদের অনুমতি ছাড়া কর্মীরা তাঁদের ছবি ব্যবহার করেছেন বলে জানান। সাঈদ খোকন বলেন, এ ধরনের ছবি ব্যবহার করাটা অরুচিকর একটা ব্যাপার। নিজের হাসিমুখের ছবি ব্যবহার করার বিষয়টি সম্পর্কে জানেন হাজি মো. সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি। কিন্তু আমি এগুলো করি নাই, আমার কর্মীরা করেছে। তবে আমরা কর্মীদের বলছি। আগামী বছর থেকে এ রকম ছবি আর দেখা যাবে না।’ তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে বায়জিদ আহমেদ খান ও এম এ আজিজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মীজানূর রহমান শেলী বলেন, ‘একদিকে আপনি বলবেন কাঁদো বাঙালি, কাঁদো। অন্যদিকে এমন হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেবেন, সেটা কাম্য নয়। যাঁরা এটা তৈরি করেছেন হয় তাঁদের যথেষ্ট মনযোগ ছিল না, বা তাঁরা এর গুরুত্ব বুঝে উঠতে পারেননি।’ তিনি বলেন, হাসিমুখ থাকবে। শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। কিন্তু সেটা শোক দিবসের ব্যানারে নয়। সেটারও আলাদা দিবস বা সময় আছে।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি বায়জিদ আহমেদ খান। ছবি: প্রথম আলো
২৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম রাডো। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি বায়জিদ আহমেদ খান। ছবি: প্রথম আলো

No comments

Powered by Blogger.