বিদ্যালয়টিতে অন্যরকম এক দিন!

চরমোহনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের
অ্যাসেম্বলি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই বিদ্যালয়ের
৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীই মেয়ে l ছবি: প্রথম আলো
প্রতিদিনকার শিক্ষকের পরিবর্তে ক্লাস নিলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কলেজের অধ্যক্ষ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও শিক্ষা কর্মকর্তা। ইংরেজি, অঙ্ক, সাধারণ জ্ঞানসহ বিভিন্ন মনীষীদের জীবনী নিয়ে আলোচনায় তাই ক্লাসগুলোও হয়ে উঠে প্রাণবন্ত, মজার, অন্যরকম। ব্যতিক্রমী এমন একটি দিন কাটল চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরমোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষকের পরিবর্তে এক ঘণ্টারও কিছু বেশি সময় বিদ্যালয়ে পাঠদান করলেন এই ব্যক্তিরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরমোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে নিয়ে গত বছরের ২ নভেম্বর প্রথম আলোয় ‘অবহেলিত জনপদে আলোর ছটা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ বিদ্যালয়ে শতকরা ৬০ শতাং​শ শিক্ষার্থী ছাত্রী। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরই আজ শিক্ষার্থীরা এমন সুযোগ পেল। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিতে বেলা ১২টা ২০ মিনিট থেকে দুইটা পর্যন্ত শিক্ষামূলক নানা বিষয়ের পাশাপাশি মনীষীদের সংগ্রামময় জীবন ও অভাব-অনটন মোকাবিলা করে লেখাপড়া করে বড় হওয়ার গল্প শুনিয়ে শিক্ষার্থীদের সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখান আজকের শিক্ষকেরা। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, পুলিশ সুপার বশির আহম্মদ, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সুলতানা রাজিয়া, বালিগ্রাম আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ আতিকুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দীন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ ওমর ফারুক, চিকিৎসক নূর-ই-আখতার জোবেদা বেগম, সদর উপজেলা প্রকৌশলী ওয়াহেদুজ্জামান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম আজ চরমোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শফিকুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে লেখাপড়া করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখানোর জন্যই এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে। চরমোহনপুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হলেও এটা এক প্রান্তে অবহেলিত এক জনপদ। গত বছরের ২ নভেম্বর প্রথম আলোয় ‘অবহেলিত জনপদে আলোর ছটা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য দুই টন চাল বরাদ্দ করেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর কবীর। সে সময় তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর ইচ্ছাতেই মূলত এই আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে এতজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পেয়ে দারুণ খুশি। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরেছে জেলা প্রশাসকের কাজের আওতা। তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কথা তুলে ধরে তা সংস্কারের দাবিও জানিয়েছে।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরির। গত চার বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশের হার শতভাগ।

No comments

Powered by Blogger.