‘স্যার’-এর জন্মদিনে

জন্মদিনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আবদুল্লাহ
আবু সায়ীদ l ছবি: সাহাদাত পারভেজ
তাঁর নাম ‘স্যার’। রসিকতা করে এটা তিনি নিজেই বলেন। বাবা-ছেলে কাউকেই তিনি কখনো পড়াননি, তারপরও তিনি দুজনেরই ‘স্যার’। বই পড়িয়ে মানুষকে আলোকিত করার এক প্রাতিষ্ঠানিক আন্দোলন শুরু করেছিলেন তিনি। আলোকিত মানুষ গড়ার সেই স্বপ্নবান মানুষটিকে শ্রদ্ধাভরে সবাই তাই স্যার বলেই ডাকেন। তিনি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। গতকাল ছিল তাঁর ৭৭তম জন্মদিন।
ঘড়ির কাঁটা যখন রাত ১২টা ১ মিনিটে ছুঁয়েছে, সামাজিক মিডিয়ায় তখন থেকেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নানা পোস্ট দেওয়া শুরু করেছিলেন তাঁর ছাত্র, ভক্ত-অনুরাগী ও বইপ্রেমীরা।
একজন লিখেছেন, ‘এক টুকরো কাগজ কখনো কখনো জীবনের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কলেজজীবনের শুরুতে সমাজবদলের জন্য ছাত্ররাজনীতিতে অংশ নেওয়া কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অনেক লিফলেট হাতে এসেছে। এসব লিফলেট যেভাবে এসেছে, সেভাবেই হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু হলুদ রঙের একটি ছোট লিফলেট কেমন করে যেন দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিল। সেটি যেখানে টেনে নিয়ে এল, দেখলাম আমার মতো অনেকেই এই ‘হলুদ নিমন্ত্রণে’ সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছে বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।’
গতকাল বিকেলে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে ভক্ত-অনুরাগীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবার হাতেই নানা রঙের ফুল আর উপহার। তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর একটি আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেছিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। সন্ধ্যা যখন আকাশ ছুঁই ছুঁই, তখন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ শুভেচ্ছা গ্রহণ করা শুরু করলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মূল মিলনায়তনে। শ্রদ্ধা আর শুভেচ্ছার ভারে ক্লান্ত হয়ে যখন একটু বসতে গেলেন তিনি, তখনই এল সুবিশাল একটি কেক। সেটি কাটার আগে স্বভাবসুলভ রসিকতা করে তিনি বললেন, ‘সবকিছুকে আমরা এশিয়ার সবচেয়ে বড় খেতাব দিতে ভালোবাসি। এত ছোট কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনকেও আমরা বলি সব থেকে বড়। সেভাবে আমি বলতে চাই, এটি এশিয়ার সব থেকে বড় কেক।’ তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রওশন আরা সায়ীদ ও কন্যা লুনা সায়ীদ।
তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোর এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের পরিচালক শরীফ মোহাম্মদ মাসুদ, ট্রাস্টি খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ অনেকে। শিক্ষক, সংগঠক, লেখক, উপস্থাপক, সম্পাদক, সাহিত্য সমালোচক, নিষ্ঠাবান পাঠক, পরিবেশকর্মী—নানা পরিচয় থাকলেও সবার আগে একজন শিক্ষক হিসেবেই তিনি তাঁর ছাত্রদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছেন।

No comments

Powered by Blogger.