গরুর হৃৎপিণ্ডের ভাল্বে নতুন জীবন

গরুর হৃৎপিণ্ড থেকে ভাল্ব নিয়ে মানবশরীরে প্রতিস্থাপন করে নতুন জীবন পেলেন ৮১ বছরের এক ভারতীয় নারী। হায়দারাবাদ নিবাসী ওই নারীর হৃৎপিণ্ডে শনিবার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয় চেন্নাইয়ের ফ্রন্টায়ার লাইফটাইম হাসপাতালে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, তার মহাধমনীর ভাল্ব সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ার কারণে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। ১১ বছর আগে তার একবার ভাল্ব প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এ বছরের শুরুতে আবারও হার্টে সমস্যা দেখা যায়। তিনি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যান। তবে কোন জায়গা থেকেই ইতিবাচক জবাব পাননি। এপ্রিলে ফ্রন্টায়ার লাইফটাইম হাসপাতালে আসেন। সেখানেই ডাক্তাররা গরুর হৃৎপিণ্ড থেকে টিস্যু নিয়ে আগের প্রতিস্থাপিত ভাল্বটিতে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। হাসপাতালের ড. কে এম চেরিয়ান বলেন, মহাধমনীর ভাল্ব গুরুতরভাবে সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া রোগী এবং অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে যারা ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছেন তাদের জন্য প্রথাগত ওপেন হার্ট সার্জারির উপযুক্ত একটি বিকল্প হলো এ পদ্ধতি। বর্ষীয়ান এ নারীর সফল অস্ত্রপচারটি করেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. আর অনন্থারামান। তিনি বলেন, ‘এপ্রিলে তিনি আমাদের কাছে আসেন গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে। তাকে বারবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায় তার প্রতিস্থাপিত মহাধমনীর ভাল্ব সঙ্কুচিত হয়ে গেছে।’ সাধারণত সঙ্কুচিত ভাল্ব সরিয়ে ফেলতে ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়ে থাকে। নতুন একটি ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু রোগীর বয়স বিবেচনা করে ডাক্তাররা ন্যূনতম ঝুঁকিপূর্ণ সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেন। অনন্থারামান বলেন, ‘আমরা গরুর হার্ট টিস্যু নিয়ে তা দিয়ে বাইও-প্রোসথেটিক একটি ভাল্ব তৈরি করি। এরপর বড় একটি ধমনীর মধ্য দিয়ে সরু নল প্রবেশ করিয়ে তার মধ্য দিয়ে সেটা প্রতিস্থাপন করি।’ অস্ত্রপচারটি ডাক্তারদের জন্য ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে ৪ সদস্যের ডাক্তারদের একটি দল সফলভাবে অস্ত্রপচারটি করতে সক্ষম হন। অস্ত্রপচারটি চলে তিনঘণ্টাব্যাপী। অস্ত্রপচারের পর রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে এবং তাকে জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.