দুই কূটনীতিকের দ্বন্দ্বে ঢাকার লিবীয় দূতাবাসে অচলাবস্থা

দুই কূটনীতিকের দ্বন্দ্বে ঢাকার লিবিয়া দূতাবাসে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বেশ কয়েক দিন ধরে লিবীয় দুই কূটনীতিক একে অপরকে ঢাকার লিবিয়ান দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলে দাবি করছেন। এ কারণেই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এই অচলাবস্থার কথা জানিয়ে গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স দাবি করে খালিদ মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, তার দেশের জনগণকে ভুল দিকনির্দেশনা ও বিভ্রান্ত করছে দূতাবাসের আগের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ এম সাল্লাবী। গত ২রা জুলাই স্টেট লিবিয়া থেকে সাল্লাবীকে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স পদ থেকে অপসারিত করা হয়। বিষয়টি লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। একই দিনে আরেকটি পত্র লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে পাঠানো হয়। ওই পত্রে তাকে বাংলাদেশে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়্যার্স নিযুক্ত করা হয় বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও জানান, লিবিয়া ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সাল্লাবী এখন আর ওই দায়িত্বে নেই। কিন্তু, খালেদ ১২ই জুলাই নতুন করে দায়িত্ব পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। এটা বিব্রতকর। সাল্লাবী লিবিয়া সরকারের ও আন্তর্জাতিক সংস্থার আইন অমান্য করেছেন। সাল্লাবী বাংলাদেশের সরকার ও বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশী মিশনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করেছেন। কূটনীতিক কোরের ডিন দাবি করে চিঠি চালাচালি করেন। সংবাদ সম্মেলনে খালিদ আরও জানান, গত জুন মাসে সাল্লাবী দুটি পত্র দেখিয়ে তাকে লেবার অ্যাটাচে ফেরত পাঠানো হয়েছে জানায়। কিন্তু, তার তথ্যের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। ৯ই জুলাই তিনি ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স হিসেবে চলতি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি তার স্টাফদের নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। গত ১৫ই জুলাই রাতে সাল্লাবী প্রায় ৫০ জন দুর্বৃত্তকে নিয়ে দূতাবাসের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। স্টাফদের মারধর করা হয়। দুর্ব্যবহার করে।  সাল্লাবী ও তার লোকজন অবৈধভাবে দূতাবাসকে দখল করে আছে। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাই। বাংলাদেশে অবস্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করি। বিভিন্ন কূটনীতিক মিশনকেও জানানো হয়েছে। আমি লিবিয়ার জনগণের প্রতি আহ্বান জানাবো দূতাবাসের অবৈধ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে যেন তারা না যান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তারা আজ দূতাবাসে যাবেন। উভয়ের কাগজপত্র দেখে লিবিয়া সরকারকে অবহিত করবেন। সংবাদ সম্মেলনে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জহির হাদি, লিয়াজোঁ অফিসার আব্দুল মান্নানসহ আরও কয়েক জন কর্মকর্তা। এদিকে লিবীয় দূতাবাসের ঘটনা সম্পর্কে জানিয়ে গুলশান জোনের ডিসির পক্ষ থেকে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, উভয়পক্ষ স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের সমর্থনে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থেকে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দূতাবাসের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে তারা লিবিয়ান দূতাবাস, নিজ বাসস্থান অথবা বাইরে কোথাও পরস্পরের সঙ্গে হাতাহাতি, মারামারি বা অধিকতর আক্রমণাত্মক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হয়েছে চিঠিতে। এর ভিত্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা আজ লিবীয় দূতাবাসে যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.