ঈদ শুভেচ্ছার ব্যানারে ঢাকা পড়েছে খুলনা

ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ঈদ শুভেচ্ছা-সংবলিত ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে খুলনা নগর। সৌন্দর্যবর্ধন স্থাপনা, সড়ক বিভাজক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসব ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানোয় ঢাকা পড়েছে নগরের সৌন্দর্য। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ৮ জুন মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনের প্রচুর ব্যানার এখনো আছে। পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনের স্থান নগরের ময়লাপোতা, রয়েল চত্বর, শিববাড়ি মোড়, শহীদ হাদিস পার্কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। এ ছাড়া কেডিএ সড়ক, পুরাতন যশোর লোয়ার রোড, রূপসা ঘাট, পিটিআই মোড়, বিভিন্ন কলেজের সামনে, মজিদ সরণি, সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড, জিরো পয়েন্টসহ ছোট-বড় সড়কের দুই পাশে ও সড়ক বিভাজনেও আছে ব্যানার, ফেস্টুন। এসব ব্যানারে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, বিসিবির পরিচালক ও বঙ্গবন্ধুর ভাইয়ের ছেলে শেখ সোহেল, শেখ হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদি, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমানের নাম ও ছবি দেখা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মোড়ে বানানো হয়েছে বেশ কিছু তোরণ।
এগুলো টাঙানো হয়েছে যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নামে। এ ছাড়া মাস দুয়েক আগে নগরের শিববাড়ি মোড়ের ফোয়ারার চারপাশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে পোস্টার টাঙিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। এতে ফোয়ারার প্রায় পুরোটাই ঢাকা পড়েছে। এ ব্যাপারে কেডিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খুলনা উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান শরীফ শফিকুল হামিদ বলেন, যেকোনো উৎসবের সময় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের স্থানগুলো প্রচারণায় ঢেকে যায়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। করপোরেশনের এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া উচিত। কথা হয় সাত রাস্তা মোড়ে চলাচলকারী নগরের বিএল কলেজের ছাত্র গৌর বর্মণের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা দেশের মতো খুলনায়ও ‘ব্যানার কালচার’ চালু হয়েছে। কোনো একটা উৎসব বা রাজনৈতিক কর্মসূচি পেলেই নগরজুড়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে যায়। উপলক্ষ বদলালেও সারা বছরই এগুলো থাকে।
জানতে চাইলে খুলনা সিটি করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ লাইসেন্স কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই এগুলো খুলছি। আপাতত রাজনৈতিক নেতাদের নাম-সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুনে হাত দিচ্ছি না। ঈদের পরপরই এগুলো খুলব।’ তিনি আরও বলেন, ‘নগরের অন্যতম সৌন্দর্যবর্ধক শিববাড়ি মোড়ের ফোয়ারা ঢেকে ফেলেছে কেডিএ। আমরা সরাতে গেলে তারা আর কিছুদিন রাখার অনুরোধ জানিয়েছে। কেডিএ যদি এমন করে, তবে অন্যরা কী করবে?’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ছবি ব্যবহার করে বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন টানাতে নিষেধ করে আগেই বিবৃতি দিয়েছি। তারপরও যারা এগুলো করেছে, তাদের এসব সরিয়ে ফেলতে কড়া নির্দেশ দিয়েছি।’
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে খুলনা নগরের সাতরাস্তা মোড় এলাকা। ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা এসব ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়েছেন l ছবি: প্রথম আলো

No comments

Powered by Blogger.