পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হলো না জয়নালের

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে ১০ বছর পর সৌদি আরব থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন জয়নাল ভূঁইয়া। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি, তাঁর স্ত্রী ইয়াসমীন (৩০) ও ছোট ভাই ইতালিপ্রবাসী সোলাইমানের মেয়ে সামিরা (১১) নিহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার তুলাইশিমুল গ্রামে।
জয়নালের বড় ভাই মো. শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, তাঁর ছোট ভাই সৌদিপ্রবাসী। তাই দশ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারেননি। ১৫ দিন আগে তিনি দেশে আসেন। তাঁর ভাইয়ের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ঈদ করতেই বাড়ি এসেছিলেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল জয়নাল ভূঁইয়া তাঁর স্ত্রী ও ভাতিজিকে নিয়ে উপজেলার আনন্দপুর গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। আখাউড়া স্থলবন্দর সড়কের নারায়ণপুর এলাকায় একটি সরু সেতুর কাছে তাঁদের বহনকারী অটোরিকশাটি থামে। ওই সেতু দিয়ে বিপরীত দিক থেকে একটি গাড়ি আসছিল। এ সময় পেছন থেকে অটোরিকশাটিকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি সড়কের পাশের গভীর খালে পড়ে যায়। পরে পাশের নূরপুর গ্রাম থেকে লোকজন এসে অটোরিকশাটি উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকারীদের একজন বাবুল খান বলেন, খাল দিয়ে উজানের ঢলের পানি নামছে। গভীরতার পাশাপাশি স্রোতও অনেক। দড়ি দিয়ে অটোরিকশাটি টেনে ওপরে তোলার পর ভেতরে তিনজনকে দেখা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
মাইক্রোবাসটি আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছালে স্থানীয় লোকজন চালকসহ যানটিকে আটক করেন। পরে পুলিশ মাইক্রোবাসসহ এর চালক কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জিহাদ মিয়াকে আটক করে। আখাউড়া থানার ওসি মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক ও অটোরিকশার চালককে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রী জান্নাত আকতারের বাবা, মা ও এক চাচাতো বোন নিহত হয়েছে। আখাউড়া থানায় গতকাল তাদের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে স্কুলছাত্রীটি ও তার এক স্বজন l ছবি: প্রথম আলো

No comments

Powered by Blogger.