পুলিশে বিএনপি জামায়াত জঙ্গি সন্ত্রাসীরা! by শেখ মামুনূর রশীদ

পুলিশ কনস্টেবল পদে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির কর্মীসহ সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। খোদ ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা এ অভিযোগ উত্থাপন করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। তাদের আরও অভিযোগ, এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়েছে। গোটা বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই পুলিশ বাহিনীতে জনবল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার লোক নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হয়েছে। বাকি নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। উল্লিখিত অভিযোগ সংসদীয় কমিটির কাছে প্রথম নজরে আনেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. দবিরুল ইসলাম। তিনি গত ৩ মার্চ ‘ঠাকুরগাঁও জেলায় অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পুলিশের কনস্টেবল পদে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত লোকজন নিয়োগের কার্যক্রম স্থগিত করা’ শীর্ষক একটি অভিযোগপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে জমা দেন। এর কয়েকদিন পর তিনি সংসদীয় কমিটির কাছে আরও একটি চিঠি দেন। ১৪ মার্চ দেয়া ওই চিঠিতে মো. দবিরুল ইসলাম কনস্টেবল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত লোকদের নাম, পিতার নাম এবং গ্রামের ঠিকানা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে তার নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ের তিন উপজেলা বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল এবং হরিপুরে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত এমন ১০ জনের নাম উল্লেখ করেন। মো. দবিরুল ইসলাম তার চিঠিতে অভিযোগ করেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুর রহিম শাহ চৌধুরী মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এ কাজ করেছেন।
মো. দবিরুল ইসলামের দাবি- বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত যে ১০ জনকে টাকার বিনিময়ে জেলা পুলিশ সুপার কনস্টেবল পদে নিয়ে দিয়েছেন তারা হলেন- বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মো. আবদুল বারেক, পিতা আজিজুর রহমান, মো. আবদুর রহমান, পিতা মো. আইয়ুব আলী, মো. রবিউল ইসলাম, পিতা শহিদুল হক, শেখ কামাল, পিতা ফজলে আলম, পারভেজ রানা, পিতা হুমায়ুন কবীর, মো. দেলোয়ার হোসেন, পিতা রাজা হক, রানীশংকৈল উপজেলার সুমন রব্বানী, পিতা ইস াফিল হক, কাজল ইসলাম জিকো, পিতা আলম হোসেন এবং হরিপুর উপজেলার মো. সোহেল রানা, পিতা আবদুল বাসেত।
তার এই অভিযোগ সংসদীয় কমিটির টানা দুই বৈঠকে উত্থাপিত হলে এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু। এছাড়া সংসদীয় কমিটির কাছে পুলিশের জনবল নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী। তবে মো. দবিরুল ইসলামের আনা অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
২২ মার্চ অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে পাওয়া গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। ওই বৈঠকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি বলেন, ‘মো. দবিরুল ইসলাম একটি পত্র দিয়েছেন, তার নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেখানে অনেক স্বাীনতাবিরোধী এবং সন্ত্রাসীকে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’ তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানান। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান টিপু মুনশি।
কমিটির সভাপতির এ বক্তব্যের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৈঠকে বলেছেন, ‘মো. দবিরুল ইসলামের অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। তিনি (মো. দবিরুল ইসলাম) ছাড়াও আরও অনেক সংসদ সদস্যের এ রকম অভিযোগ রয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদ সদস্যের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদস্য নিয়োগের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে এবং যদি এ বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার নিয়োগ বাতিল করা হবে।’ তখন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু বলেন, তার নির্বাচনী এলাকায়ও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একটি করে কমিটি গঠন করে এবং এই কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পুলিশে জনবল নিয়োগ করা প্রয়োজন। শামসুল হক টুকু আরও বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী, জঙ্গি কিংবা স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের কোনোভাবেই যাতে পুলিশে নিয়োগ দেয়া না হয়। যদি কোনো স্বাধীনতাবিরোধী, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি ব্যক্তি পুলিশে নিয়োগ পায়, তাহলে তাদের দিয়ে অনেক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করা সহজ হবে এবং তারা অবৈধ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে। যার ফলে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংঘটিত হবে। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক জেলায় পুলিশ জনবল নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি চিঠি দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। সম্প্রতি নিয়োগকৃত পুলিশ সদস্যদের আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য কমিটিকে বলেন।
এ আলোচনার এক পর্যায়ে বৈঠকে উপস্থিত অতিরিক্ত আইজিপি (পুলিশ সদর দফতর) বলেন, ‘আইজিপি এ বিষয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছেন। ওই কমিটির সদস্যরা সংসদ সদস্য মো. দবিরুল ইসলামের নির্বাচনী এলাকায় পরিদর্শন করে এসেছেন এবং একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত রয়েছেন।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশে যদি চিহ্নিত সন্ত্রাসী, জঙ্গি এবং স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে তাহলে তা সত্যি সত্যিই দুঃখজনক ও খুবই খারাপ ঘটনা।’ তিনি এ সময় বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে একটি চিঠি পাঠানোর জন্য বলেন। যাদের ইতিমধ্যে পুলিশে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা কেমন লোক, ভালো না খারাপ এবং কে কোন দল করে তা যাচাই-বাছাই করে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘নিয়োগপ্রাপ্ত যাদের বিরুদ্ধে খারাপ রিপোর্ট পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর বৈঠকে উপস্থিত কমিটির সদস্য জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, সব পুলিশ সদস্য যে ভালো তা নয়, কিছু খারাপ পুলিশ থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্য মো. দবিরুল ইসলাম যে অভিযোগপত্র সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দিয়েছেন তা গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন পুলিশে নিয়োগ নিয়ে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশনা দেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘কেউ পরিষ্কারভাবে বলতে পারবে না যে, কে কোন দলের লোক। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত আছেন কিনা। অনেকে রিপোর্ট দিয়েছেন যে, সে সঠিক লোক, তার ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেই।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে রিপোর্ট আসছে তা সঠিকই আছে। বৈঠকে সিনিয়র সচিব আরও বলেন, ‘যে তথ্য দিয়েছে বা অভিযোগ করেছে সেটা যে ভালো তাও বলা যাবে না। রাজবাড়ীর একজন সংসদ সদস্য এ বিষয়ে অনেক অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে ডিজিএফআই ও এনএসআইসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে রিপোর্ট উপস্থাপন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে যদি সিদ্ধান্ত দেয়া হয় যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট উপস্থাপন করবে তাহলে তা করা হবে।’
পরে কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি সংসদীয় কমিটিতে দেয়া মো. বদিরুল ইসলামের অভিযোগপত্রটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশনা দেন। তিনি অন্য সংসদ সদস্যদের এ সংক্রান্ত অভিযোগও খতিয়ে দেখার জন্য বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ ২৪ মে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও পুলিশে কনস্টেবল পদে বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিদের নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মো. দবিরুল ইসলামের উত্থাপিত অভিযোগের আলোকে করা তদন্ত প্রতিদেন জমা দেয়া হয়।
এসবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অনুসন্ধান ও প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের ২৪ ফেব্র“য়ারি মো. দবিরুল ইসলম তার জাতীয় সংসদের প্যাডে ‘ঠাকুরগাঁও জেলা ও আমার নির্বাচনী এলাকার পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদান প্রসঙ্গ’ বিষয়ে তার স্বাক্ষরিত ৭৯ জনের একটি তালিকা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণ করেন এবং পরবর্তীকালে ২৫ ফেব্র“য়ারি একই বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে ৪৭ জনের একটি সংশোধিত তালিকা পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়ার নিমিত্তে প্রেরণ করেন। ওই ৪৭ জনের তালিকা থেকে মনোনীত তালিকায় ১৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা যায়। মো. দবিরুল ইসলামের প্রেরিত ৪৭ জনের নামের তালিকার মধ্যে মাত্র ১৩ জনের নাম মনোনীত তালিকায় থাকায় তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।’
তদন্তকারী কর্মকর্তা তার তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করেন, ‘প্রকাশ্য ও গোপন অনুসন্ধানকালে অভিযোগে উল্লেখিত তালিকার ৪৪ জন প্রার্থীর মধ্যে মনোনীত তালিকায় স্থানপ্রাপ্ত ১৪ জনের কেউ বিএনপি, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কনস্টেবল নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অভিযোগে (জনশ্র“তি আছে) উল্লেখ থাকলেও এ বিষয়ে প্রার্থী, তাদের অভিভাবক বা অন্য কারও কাছ থেকে অনুসন্ধানকালে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানকালে ঠাকুরগাঁও জেলায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে যথাযথ নিয়োগ বিধি অনুসরণ করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। অভিযোগে উল্লেখিত ৬৭ জনের নিয়োগ পরীক্ষা বিশেষ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করেছে মর্মে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার মো. আবদুর রহিম শাহ্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. দবিরুল ইসলাম বুধবার যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশ উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে কনস্টেবল পদে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার মো. আবদুর রহিম শাহ চৌধুরী। তাকে স্বপদে বহাল রেখে তার অধীনস্থ একজন জুনিয়র কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টির তদন্ত করা হয়েছে। জুনিয়র একজন কর্মকর্তার পক্ষে সিনিয়র একজন কর্মকর্তার অভিযোগ তদন্ত করা হলে তা কখনোই নিরপেক্ষ হবে না। এই তদন্ত প্রতিবেদনও নিরপেক্ষ হয়নি। অভিযুক্তকে রেহাই দিয়ে একপেশে একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। আমার বক্তব্য শোনেনি। তাহলে তিনি কিসের ভিত্তিতে তদন্ত করলেন?’
এ বিষয়ে আরেক অভিযোগকারী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাসমুল হক টুকু যুগান্তরকে বলেন, তার এলাকায়ও কনস্টেবল নিয়োগ নিয়ে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের জেলা পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা টাকার বিনিময়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন লোকজনকে নিয়োগ দিচ্ছেন। কোথাও কোথাও চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত- এমন ব্যক্তিদেরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’

No comments

Powered by Blogger.