গরমে ফটিকছড়িতে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রকোপ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেঝে বারান্দায়ও রোগী

ফটিকছড়ির স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় পাতা শয্যায়
চিকিৎ​সাসেবা দেওয়া হচ্ছে এক শিশুকে l প্রথম আলো
ওয়ার্ডের কোনো শয্যা খালি নেই। মেঝেতেও রোগী। কয়েকজনের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়। সেখানেই শয্যা পেতে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। এ চিত্র ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। এসব রোগীর বেশির ভাগ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়নাল আবেদিন মুহুরী বলেন, ‘ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় শিশুসহ ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের মেঝে এবং বারান্দায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের নিরাপদে রাখা প্রয়োজন। তাদের বারান্দায়, মেঝেতে থাকতে দিয়ে আমার নিজেরও খারাপ লাগছে।’
২৪ মে সরেজমিনে দেখা যায়, ৩১ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪৮ জন। এদের মধ্যে ২০ জন ডায়রিয়া এবং ১৮ জন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু। এদের স্থান হয়েছে ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় পাতা শয্যায়।
মেঝেতে পাতা শয্যায় ১০ মাস বয়সী শিশু সজীবকে নিয়ে বসে আছেন মা হাসিনা আকতার। সজীবের শ্বাসকষ্ট। উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রাম থেকে এসেছেন তিনি। তিনি জানান, বাইরের ক্লিনিকে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই। নিরুপায় হয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও শিশুকে নিয়ে মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলার ইমামনগর গ্রামের রোবায়েত হোসেন জানান, তাঁর এক বছর বয়সী ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। দুদিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। রাতে প্রচণ্ড গরম ছেলেকে আরও কাবু করে দেয়। লোড়শেড়িংয়ের ফলে ভোগান্তি বাড়ে।
এককুলীয়া গ্রামের জমিল উদ্দিন তিন দিন ধরে মেয়ে জান্নাতুল মাওয়াকে নিয়ে ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘রোগীর যে িভড় কর্তৃপক্ষ আমাকে একটি সিট দেবে, এমন কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। গরমে কষ্ট হলেও কিছু করার নেই। এরপরও হাসপাতালে থাকতে হবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘২০১৪ সালের ২৮ মে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রশাসনিক অনুমোদন হলেও এখনো আগের জনবল ও অবকাঠামো দিয়েই এটির কার্যক্রম চলছে। এখানে প্রতিদিনই ধারণক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি হয়। অতিরিক্তদের বারান্দা ও মেঝেতেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে ফটিকছড়ির সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, রোগীদের অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে চলতি অর্থবছরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জনবল ও অবকাঠামো তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.