নগ্ন না হলে ফেল!

নগ্ন চিত্র আঁকছেন একজন শিল্পী।
ছবি: নিউজ ডট কমের সৌজন্যে
ফাইনাল পরীক্ষায় শিক্ষকের সামনে নগ্ন হতেই হবে; নইলে নির্ঘাত ফেল। আঁতকে ওঠার মতো খবর বটে! কিন্তু গত ১১ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়াগোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় এই রেওয়াজ চালু রয়েছে। সেখানকার ভিজ্যুয়াল আর্টস বিষয়ের সমাপনী পরীক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবেই নগ্ন হতে হয় সবাইকে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নগ্ন হন শিক্ষকও। তারপর শুরু হয় শরীরের নানা ভঙ্গির শিল্পসম্মত চিত্র আঁকার কাজ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ক্লাসের পাঠ নিচ্ছেন অধ্যাপক রিকার্ডো ডমিনগুয়েজ।
দ্য গার্ডিয়ান ও ডেইলি মেইলে প্রকাশিত প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই পরীক্ষায় শুধু নগ্ন হলেই হয় না। আধো আঁধারি ঘরে শিক্ষার্থীদের নগ্ন হয়ে ‘উত্তেজক’ অঙ্গভঙ্গি করতে হয়।
১১ বছর ধরে ভিজ্যুয়াল আর্টস বিষয়ের সমাপনী পরীক্ষায় নগ্নতার এই নিয়ম চলে এলেও হঠাৎ করেই আপত্তি জানিয়েছেন ওই ক্লাসেরই এক ছাত্রীর মা। কেজি টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্রীর মা জানান, ‘ক্লাসে পাস করতে হলে নগ্ন হতেই হবে, এটা একটা বিকৃত রুচির ব্যাপার। বিরক্তিকরও বটে। তা ছাড়া আমি তো আমার মেয়েকে নগ্ন হওয়ার জন্য ক্লাসে পাঠাই না। একটা আধো আঁধারি কক্ষে সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকও নগ্ন হয়ে থাকবেন, ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন গা গুলিয়ে আসছে।’
নগ্ন চিত্র আঁকছেন একজন শিল্পী। ছবি: নিউজ ডট কমের সৌজন্যে।
তবে অধ্যাপক রিকার্ডো ডমিনগুয়েজ এই সিলেবাসকে কোনোভাবেই পরিবর্তন করতে নারাজ। কেজি টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ফাইনাল পরীক্ষায় পাস করতে হলে ছাত্রছাত্রীদের নগ্ন হতেই হবে। তিনি বলেন, ‘গত ১১ বছর ধরে এই সিলেবাস চলছে। এত দিন কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তা ছাড়া শুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা ওয়াকিবহাল থাকে যে, তাঁদের ক্লাস সমাপনী পরীক্ষায় নগ্ন হতেই হবে। তাঁরা শুরু থেকে নিজেদের সেভাবেই তৈরি করতে থাকে। শিল্পের জন্য নগ্ন হওয়াতে খারাপ কিছু নেই। তা ছাড়া এখানে কেউ একা নগ্ন হয় না। একটা মোম জ্বালানো ঘরে সবাই এক সঙ্গে নগ্ন হয়। তাই এখানে যৌনতারও কিছু নেই।’
সান ডিয়াগোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় ভিজ্যুয়াল আর্টস বিভাগের শিক্ষক রিকার্ডো ডমিনগুয়েজ। ছবি: ডেইলি মেইলের সৌজন্যে।
ডমিনগুয়েজ আরও বলেন, কারও এই নগ্ন হওয়াতে আপত্তি থাকলে ভিজ্যুয়াল আর্টস বিষয়টি তাঁরা না নিয়ে অন্য কোনো বিষয় নিয়েই পড়লে পারেন। কারণ, ক্লাসের একেবারে শেষে শরীরের বিভিন্ন ধরনের গঠনের ছবি আঁকা হয়, যার জন্য ক্লাসে নগ্ন হতেই হবে।
তবে এ ব্যাপারে ভিজ্যুয়াল আর্টস বিভাগের চেয়ারম্যান জর্ডান ক্র্যানডাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি ডমিনগুয়েজকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শরীরের সব কাপড় খুলে নগ্ন হওয়াটা এই ক্লাসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। নগ্নতার পাঠের নানা পদ্ধতি আছে। সেসব ভাবলেই হয়।

No comments

Powered by Blogger.