আটে মাঠে চার by মারুফ কিবরিয়া

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি। ২৮শে এপ্রিলকে সামনে রেখে মেয়র ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী আসনের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে চলছে জোর প্রস্তুতি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯, ২০ ও ২১নং ওয়ার্ড মিলিয়ে সংরক্ষিত আসন ৬। এখানে কাউন্সিলর পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৮ জন নারী প্রার্থী। সংখ্যার দিক থেকে আটজন থাকলেও মূলত মাঠে লড়ছেন ৪ জন। বাকিদের মাঠে কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে। তবে এ চার নারী প্রার্থীর মধ্যেই চলছে যত কাদা ছোড়াছুড়ি। ভোটের লড়াইয়ে কেউ কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেবেন না এটাই স্বাভাবিক। তবে এ চার প্রতিদ্বন্দ্বী একে অন্যকে দোষারোপ করেই যাচ্ছেন। গতকাল সরজমিন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। যে আটজন বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তারা হলেন খালেদা বাহার বিউটি (মোড়া), আঞ্জুমানারা বেগম (পানপাতা), তাছরিন আক্তার (পিঞ্জর), তাহমিনা শাহীন (টিস্যু বক্স), মনোয়ারা মজলিশ (কেটলি), পেয়ারা মোস্তফা (গ্লাস), সেলিনা আক্তার (স্টিল আলমারি) ও শাহনাজ হাবীব (বৈয়াম)। মাঠে প্রচার-প্রচারণার নিয়ে প্রার্থীরা ব্যস্ত থাকলেও একজনের দোষ আরেকজনের ওপর চাপাতে মোটেও ভুল করছেন তারা। একজনের পোস্টার অন্যজন ছেঁড়া, ভয়-ভীতি দেখানোসহ নানা অভিযোগ করছেন এসব প্রার্থী। তবে এটা লক্ষ্য করা গেছে, মাঠে থাকা চার প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা বাহার বিউটি, মরোয়ারা মজলিশ, তাহমিনা শাহীন ও পেয়ারা মোস্তফার মধ্যে। প্রচারের জন্য ঝোলানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, এলাকায় ভোট চাইতে গেলেই অন্য প্রার্থীর কর্মীরা এসে মারার হুমকিও দিচ্ছে- এসব অভিযোগই শোনা গেছে তাদের কাছ থেকে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মরোয়ারা মজলিশ জানান, আমি মাঠে নামতে পারছি না। নামলেই মারধরের হুমকি দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে থেকেই এসব হুমকি শুনে আসছি। জীবনবাজি রেখে এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই বলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আর সেখানে চারদিক থেকে বাধা আসছেই। শুধু তাই নয়, আমার পোস্টার যেখানে যেখানে দেখছে ছিঁড়ে ফেলছে। আর এসব আমার প্রতিপক্ষ খালেদা বাহার বিউটির লোকজনই করছে বলে আমি মনে করি। রাতের অন্ধকারে ট্রাকে মালামাল নামানোর কথা বলে আমার যত পোস্টার ছিল সব ছিঁড়ে ফেলেছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তবে আমার এলাকাবাসীর অনেক সমর্থন রয়েছে। তারা সাহস দিচ্ছেন বলেই এখন পর্যন্ত মাঠে টিকে আছি। এদিকে এসব অভিযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খালেদা বাহার বিউটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বিএনপির সমর্থিত মনোনীত প্রার্থী তাহমিনা শাহীন অনেকটা নীরবেই ভোটের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নিরাপত্তা নিয়ে তারও রয়েছে অনেক অভিযোগ। নির্বাচনের দিন ভোটের মাঠে না যাওয়ার মতো হুমকি নিয়েও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাহমিনা শাহীন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত হুমকি আমার পিছু ছাড়ছে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে যেন না যাই এসব হুমকিও দেয়া হয়েছে। এমনকি এলাকায় এলাকায় কোন প্রচার-প্রচারণা যেন না করি সেসব নিয়ে বাধা দেয়া হচ্ছে সব সময়। তবে এসব কথা শুনেও আমি থেমে নেই। আমি কোন ভয়-ভীতিকে ভয় করি না। কারণ আমি জানি জনগণ আমার সঙ্গে আছে। তারা আমাকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মনে করে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন- এমনটাই বিশ্বাস করি। অবশ্য এত অভিযোগ আর দোষারোপের কোন তোয়াক্কা না করেই আপন গতিতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত আছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী পেয়ারা মোস্তফা। নির্বাচনে নিজের অবস্থান নিয়ে বেশ আশাবাদী সাবেক এই ওয়ার্ড কমিশনার।

No comments

Powered by Blogger.