দায় অস্বীকারের সংস্কৃতি- নির্বাচন কমিশনের ঘুম ভাঙুক

নির্বাচনী প্রচারে নেমে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া যে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রথমে তা স্বীকারই করতে চাননি। এখন কোনো কোনো নেতা বলছেন, হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়। কারও ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটুক, তা তাঁরা চান না। তবে সেই সঙ্গে এ কথাও জুড়ে দিয়েছেন যে খালেদা জিয়ার এভাবে গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামা ঠিক হয়নি। প্রশ্ন হলো, নির্বাচনী প্রচারে কে নামতে পারবেন, কে পারবেন না, সেটি দেখার দায়িত্ব কার? নিশ্চয়ই কোনো দলের নেতা-কর্মীদের নয়। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা বলার চেষ্টা করছেন যে, বিএনপি নেত্রীকে দেখলেই নাকি আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সালেহ আহমেদ নামের যে যুবক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে খালেদার গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কেউ নন, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আগে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলেও এখন বিশেষ দায়িত্ব দিয়েই তাঁকে মাঠে নামানো হয়েছে। সালেহ আহমেদ একা নন, খালেদার গাড়িবহরে যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, গাড়িবহর নিয়ে বিএনপির নেত্রীর নির্বাচনী প্রচারে নামা ঠিক হয়নি। এর প্রতিকারে তাঁরা নির্বাচন কমিশনে নালিশ না জানিয়ে দলীয় কর্মীদের দিয়ে তাঁকে এভাবে লাঞ্ছিত ও অপমান করতে পারেন না। আওয়ামী লীগের নেতা–নেত্রীদের অতীতের দিকে তাকাতে বলব, যখন তাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন না। সে সময়ে বিরোধী দলের নেতা–নেত্রীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা যদি নিন্দনীয় হয়ে থাকে, এখন বিএনপি নেত্রীর ওপর হামলাও নন্দিত হতে পারে না।
আইনের শাসন মানলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। তবে এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের নীরবতাও নিন্দনীয়। কমিশন ঘোষিত কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে যদি কেউ হামলার শিকার হন, তার নিরাপত্তার দায়িত্ব সংস্থাটি কীভাবে এড়াবে? আমরা চাই, কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক। নাহলে সব অঘটনের দায় তাকেই নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.