রাজ্যে রাজ্যে নাজুক অবস্থা কংগ্রেসের

রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের হাল ক্রমে খারাপ হচ্ছে। আসাম ও মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের দাবিতে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন। জম্মু-কাশ্মীরে জোট ভেঙে কংগ্রেস বেরিয়ে আসার পর সেখানে দল ছাড়লেন সাবেক সাংসদ। এ অবস্থায় চলতি বছরের শেষে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটে কংগ্রেসের হাল কী হবে, সে নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠে গেছে। আসামে তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বিরুদ্ধে দলের একাংশের ক্ষোভ অনেক দিনের। বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর দাবি, দলের ৭৮ জন বিধায়কের মধ্যে তাঁর পক্ষে রয়েছেন অন্তত ৩২ জন। মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তনের দাবিতে বেশ কয়েক মাস ধরে সুর চড়ালেও হাইকমান্ড গগৈকে সরাতে রাজি হয়নি। গতকাল সোমবার সেই পুরোনো দাবি নিয়ে বিশ্বশর্মা রাজ্যপাল জানকিবল্লভ পট্টনায়কের কাছে ৩২ জন বিধায়ক নিয়ে হাজির হন। তারপর তিনি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন। বিশ্বশর্মার দাবি, অবিলম্বে নেতৃত্বের বদল না হলে তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা কমলনাথ দলের সংকট স্বীকার করে জানান, সমস্যা একটা হয়েছে, তবে মিটে যাবে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব তরুণ গগৈয়ের সৎ ও স্বচ্ছ প্রশাসনের ওপর এখনো ভরসা রাখতে চান। বিজেপি অবশ্য কংগ্রেসের এ অবস্থায় উৎফুল্ল। লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যে তারা মোট সাতটি আসন জিতেছে।
কংগ্রেস সেখানে জেতে মাত্র তিনটি আসন। আসামের মতো কংগ্রেসের হাল মহারাষ্ট্রেও। সেখানে গতকাল মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন শিল্পমন্ত্রী নারায়ণ রানে। তাঁর দাবি, ২০০৫ সালে যখন তিনি শিব সেনা থেকে কংগ্রেসে যোগ দেন, তখন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি আজও পালিত হয়নি। পৃথ্বীরাজ চৌহানের জায়গায় তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে নারাজ কংগ্রেস হাইকমান্ড। সে কথা গত মাসে তাঁকে বুঝিয়েও দেওয়া হয়। পৃথ্বীরাজ চৌহানের অধীনে কাজ করা সম্ভব নয় জানিয়ে ক্ষুব্ধ রানে গতকাল মন্ত্রিপদে ইস্তফা দিয়ে পরবর্তী জল্পনা জিইয়ে রাখলেন। রাজ্য সূত্রে খবর, নারায়ণ রানের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। গত রোববার জম্মু ও কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোট ভেঙে বেরিয়ে আসে কংগ্রেস। গতকাল সেই রাজ্যের উধমপুরের সাবেক সাংসদ লাল সিং কংগ্রেস ত্যাগ করেন। লাল সিংকে এবার লোকসভা ভোটে কংগ্রেস টিকিট দেয়নি। গোটা রাজ্যের ছয়টি আসনের একটিও কংগ্রেস পায়নি। লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয় মহারাষ্ট্রেও। ৪৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় মাত্র দুটি, সঙ্গী এনসিপি চারটি। এ রাজ্যে কংগ্রেস-এনসিপি জোট অবশ্য এখনো অটুট।

No comments

Powered by Blogger.