বিকৃত রুচির এক ভয়ঙ্কর খুনি by ইমরান আলী

সমাজে বসবাস করে একজনের পাশে আরেকজন মানুষ দাঁড়াবে- এটাই স্বাভাবিক। তেমনি কোন কারণে একজনের উপর আরেকজনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাও স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা যদি হয় চরম অন্যায়ের পর্যায়ে স্বয়ং আরেকজনকে খুন এর মাধ্যমে তাহলে সেটা স্বাভাবিক মানুষের কাজ হতে পারে না, সেটা শুধু অন্যায়ই নয়, মহাঅন্যায়। যুগে যুগে এমন সব কুখ্যাত মানুষ নামের নরপশু বেড়ে উঠে অন্যের উপর ক্ষোভ প্রকাশ বা প্রতিশোধ নিতেই নয় সরাসরি অন্যের জীবন নিতে কোন কারণ ছাড়াই। এমনই একজন আন্দ্রি চিকাতিলো (জন্ম  ১৬অক্টোবর ১৯৩৬- মৃত্যু ১৪ ফেব্রুয়ারি  ১৯৯৪)। যার পশুত্বমূলক আচরণ থেকে রেহাই পাইনি অনেক নারী, শিশু ও যুবক। ইউক্রেনিয়ান সিরিয়াল কিলার। রস্তোভ-এর কসাই নামেও পরিচিত ছিলেন এই খুনি। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ এর সময়ে অন্তত ৫৬ জন নারী ও শিশু হত্যার জন্য অভিযুক্ত। এর মধ্যে ৫৩টি প্রমাণিত।

রস্তোভ শহরে ১৯৭৮ এ সে প্রথম খুন করে। সে বছরেই ২২ ডিসেম্বরে এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গোপনে জায়গায় কেনা তার পুরাতন বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে । না  পেরে তাকে নির্মমভাবে নিঃশ্বাস বন্ধ করে হত্যা করে। এই ভয়ঙ্কর খুনি যে শুধুমাত্র খুনই  করতো তা নয়। তার হাতে নিহত নারীদের উপর চলতো যৌন লালসা পূরণের নোংরা কর্মকাণ্ড। তার প্রথম ভিকটিম ছিল ৯ বছরের এক মেয়ে শিশু। যখন তাকে হত্যা করে তখন সে নিজে থেকে সেক্সুয়ালি সেটিস্ফাইড হয়। এমন বিকৃত রুচির মানুষটি শুধুমাত্র মৃত নারীর উপর যৌন আকাক্সক্ষা পূরণ করতেই একের পর এক খুন করতে থাকে। তার টার্গেট ছিল মূলত পতিতালয়ের কোন নারী,   গৃহহীন যেসব নারীরা রাস্তায় ঘুরতো তারা। তবে কেন তিনি অন্য স্বাভাবিক মানুষের মতো বেড়ে না উঠে হয়ে উঠলেন দুর্ধর্ষ খুনি  সে নিয়েও আছে নানান কথা। জন্মের পর  থেকে অভাবী বাবা-মার ঘরে বড় হওয়াকে অনেকে কারণ হিসেবে দেখেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় তার ছোটবেলা অনেক সময়  কেটেছে না খেয়ে কখনো ক্ষুধার তাড়নায় ঘাস লতা পাতা খেয়েও নাকি থাকতে হয়েছে। শহরের ভ্রাম্যমাণ মানুষজন থাকতো এই খুনির আতঙ্কে। ১৯৯৪ সালে এই খুনির ডান কানের পেছনে গুলি করে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.