নিমতলী ট্র্যাজেডির চার বছর

চার বছর আগে রাজধানীর নিমতলীতে রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ১২৩ জন মানুষের প্রাণহানির ঘটনা দেশবাসীকে নাড়া দিলেও সরকারকে কতটা নাড়া দিয়েছে, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ৷ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা থাকা ঠিক নয়৷ অথচ এত বড় ট্র্যাজেডির চার বছর পরও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে বলা যাবে না৷ সাবেক শিল্পমন্ত্রী রাসায়নিক গুদামগুলো সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ তিনি নিজে সরে গেছেন, কিন্তু তঁার নির্দেশ কার্যকর হয়নি৷ নতুন শিল্পসচিব বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা মৌজায় নতুন রাসায়নিক পিল্ল করার কথা জানালেও সেই কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে কিংবা পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো কখন সরানো সম্ভব হবে, তা বলতে পারেননি৷ সেখানে ২০ একর জমির ওপর ছয়তলা ১৭টি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এতে এক হাজার ৭৯টি গুদামের সংকুলান হতে পারে৷ কিন্তু পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম ও কারখানার সংখ্যা চার হাজারেরও বেশি৷ বািকগুলোর কী হবে?
আমরা ভুলে যাইনি হাজারীবাগে অবস্থিত চামড়াশিল্প সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল দুই দশকের বেশি সময় আগে৷ এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ধরনের জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কর্তাব্যক্তিদের গড়িমসির কারণও অজানা নয়। স্বার্থান্বেষী মহল অনেক সময়ই সরকারের ওপর অন্যায় চাপ সৃষ্টি করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া থামিয়ে দেয়৷ এ ক্ষেত্রেও তেমন কিছু ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন৷ শিল্প–কারখানার চাহিদা মেটাতে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলোর প্রয়োজনীয়তা আছে, একথা অস্বীকার করা যাবে না৷ কিন্তু সেসব গুদাম ও কারখানা অবশ্যই আবাসিক এলাকার বাইরে থাকতে হবে৷ অতএব, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পুরান ঢাকার সব রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা অবিলম্বে সোনাকান্দায় সরিয়ে নেওয়া হোক৷

No comments

Powered by Blogger.