মৃত্যুহীন প্রাণ by আসিফ রশীদ
একটি পৃথিবী মৃত, অন্যটি ক্ষমতাহীন
এ দুইয়ের মাঝে হাঁটতে গিয়ে
আমি থেকেছি বিশ্রামহীন।
- ম্যাথু আর্নল্ড
ম্যান্ডেলা মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করেননি, মৃত্যুই ম্যান্ডেলার জন্য অপেক্ষা করেছিল। চারদিক থেকে প্রতিকূলতায় ঘেরা একটি সমস্যা সংকুল বিশ্বে যখন তার আবির্ভাব ঘটেছিল এবং সেই বিশ্ব থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সত্য, তখন পরাজয় ঘটেছিল ম্যান্ডেলার। কিন্তু তিনি ফিরে এসেছিলেন বিজয়ী হয়ে, বীরের বেশে। তার সামনে তখন সব বিকল্পই ছিল। যাদের দ্বারা তিনি নিগৃহীত হয়েছিলেন, হারিয়ে ফেলেছিলেন যৌবনের ২৭টি বছর, তাদের ওপর তিনি প্রতিশোধ নিতে পারতেন অবলীলায়। কিন্তু শত্র“কে ক্ষমা করে দেয়ার বিকল্পটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
ম্যান্ডেলা একবার বলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকাবাসীকে স্মরণ করতে হবে তাদের ভয়াবহ অতীতের কথা, যাতে আমরা সঠিক পদক্ষেপটি নিতে পারি। যেখানে ক্ষমা করা দরকার, সেখানে ক্ষমা করতে হবে। তবে অতীতকে কখনও ভুলে গেলে চলবে না।
ম্যান্ডেলার সংগ্রাম ছিল যে বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কেমন ছিল তার রূপ, সেটা কারোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ম্যান্ডেলার আÍজীবনী গ্রন্থ ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’ থেকে আমরা জানতে পারি, শ্বেতাঙ্গরা জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ হয়েও তিন শতাব্দীরও বেশি শাসন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই তো সেদিনের কথা। বর্ণবাদের ভিত গড়তে কতই না আইন করেছিল তারা। ১৯১৩ সালের ভূমি আইনের মাধ্যমে দেশের ৮৭ ভাগ ভূখণ্ড থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের। ১৯২৩ সালের নগর এলাকা আইনের মাধ্যমে কালোদের জন্য শহরতলীতে গড়ে তোলা হয় অসংখ্য বস্তি। উদ্দেশ্য সাদাদের শিল্পকারখানার জন্য সস্তায় শ্রমিক সরবরাহ। শহরের কেন্দ্রে বসবাসের অধিকার ছিল না তাদের। নিজ দেশে চলাফেরায় ছিল না স্বাধীনতা। ছিল না স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার অধিকার।
ম্যান্ডেলা লিখেছেন : ‘একজন আফ্রিকান শিশুর জন্ম হয় শুধু আফ্রিকানদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হাসপাতালে। তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় শুধু আফ্রিকানদের বাসে করে। সে বসবাস করে শুধু আফ্রিকানদের এলাকায় এবং পড়াশোনা করে কেবল আফ্রিকানদের স্কুলে- যদি আদৌ সে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়। যখন বড় হয়, তখন আফ্রিকানদের জন্য নির্দিষ্ট চাকরিটিই কেবল সে করতে পারে। বাড়িভাড়া নেয় শুধু আফ্রিকানদের জন্য নির্ধারিত শহরতলীতে। চড়ে কেবল আফ্রিকানদের নির্দিষ্ট ট্রেনে। দিনে বা রাতের যে কোনো সময় তাকে পথিমধ্যে পাস দেখানোর নির্দেশ দেয়া হতে পারে। কেউ দেখাতে ব্যর্থ হলে তাকে গ্রেফতার করে জেলে নিক্ষেপ করা হয়। বর্ণবাদী আইন ও নিয়ম-কানুন দ্বারা তার জীবন হয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রিত, যা তাকে বেড়ে ওঠার পথে পঙ্গু করে দেয়। তার সম্ভাবনাগুলো ঝাপসা করে ফেলে এবং তার জীবনের বিকাশকে করে দেয় রুদ্ধ।’
দক্ষিণ আফ্রিকার এই চরম বর্ণবাদী নীতিই ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের দারিদ্র্যের প্রধান কারণ। ম্যান্ডেলা যখন জোহানেসবার্গে ল’ ফার্মে কেরানির কাজ করার পাশাপাশি পড়
এ দুইয়ের মাঝে হাঁটতে গিয়ে
আমি থেকেছি বিশ্রামহীন।
- ম্যাথু আর্নল্ড
ম্যান্ডেলা মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করেননি, মৃত্যুই ম্যান্ডেলার জন্য অপেক্ষা করেছিল। চারদিক থেকে প্রতিকূলতায় ঘেরা একটি সমস্যা সংকুল বিশ্বে যখন তার আবির্ভাব ঘটেছিল এবং সেই বিশ্ব থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সত্য, তখন পরাজয় ঘটেছিল ম্যান্ডেলার। কিন্তু তিনি ফিরে এসেছিলেন বিজয়ী হয়ে, বীরের বেশে। তার সামনে তখন সব বিকল্পই ছিল। যাদের দ্বারা তিনি নিগৃহীত হয়েছিলেন, হারিয়ে ফেলেছিলেন যৌবনের ২৭টি বছর, তাদের ওপর তিনি প্রতিশোধ নিতে পারতেন অবলীলায়। কিন্তু শত্র“কে ক্ষমা করে দেয়ার বিকল্পটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
ম্যান্ডেলা একবার বলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকাবাসীকে স্মরণ করতে হবে তাদের ভয়াবহ অতীতের কথা, যাতে আমরা সঠিক পদক্ষেপটি নিতে পারি। যেখানে ক্ষমা করা দরকার, সেখানে ক্ষমা করতে হবে। তবে অতীতকে কখনও ভুলে গেলে চলবে না।
ম্যান্ডেলার সংগ্রাম ছিল যে বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কেমন ছিল তার রূপ, সেটা কারোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ম্যান্ডেলার আÍজীবনী গ্রন্থ ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম’ থেকে আমরা জানতে পারি, শ্বেতাঙ্গরা জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ হয়েও তিন শতাব্দীরও বেশি শাসন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই তো সেদিনের কথা। বর্ণবাদের ভিত গড়তে কতই না আইন করেছিল তারা। ১৯১৩ সালের ভূমি আইনের মাধ্যমে দেশের ৮৭ ভাগ ভূখণ্ড থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের। ১৯২৩ সালের নগর এলাকা আইনের মাধ্যমে কালোদের জন্য শহরতলীতে গড়ে তোলা হয় অসংখ্য বস্তি। উদ্দেশ্য সাদাদের শিল্পকারখানার জন্য সস্তায় শ্রমিক সরবরাহ। শহরের কেন্দ্রে বসবাসের অধিকার ছিল না তাদের। নিজ দেশে চলাফেরায় ছিল না স্বাধীনতা। ছিল না স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার অধিকার।
ম্যান্ডেলা লিখেছেন : ‘একজন আফ্রিকান শিশুর জন্ম হয় শুধু আফ্রিকানদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হাসপাতালে। তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় শুধু আফ্রিকানদের বাসে করে। সে বসবাস করে শুধু আফ্রিকানদের এলাকায় এবং পড়াশোনা করে কেবল আফ্রিকানদের স্কুলে- যদি আদৌ সে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়। যখন বড় হয়, তখন আফ্রিকানদের জন্য নির্দিষ্ট চাকরিটিই কেবল সে করতে পারে। বাড়িভাড়া নেয় শুধু আফ্রিকানদের জন্য নির্ধারিত শহরতলীতে। চড়ে কেবল আফ্রিকানদের নির্দিষ্ট ট্রেনে। দিনে বা রাতের যে কোনো সময় তাকে পথিমধ্যে পাস দেখানোর নির্দেশ দেয়া হতে পারে। কেউ দেখাতে ব্যর্থ হলে তাকে গ্রেফতার করে জেলে নিক্ষেপ করা হয়। বর্ণবাদী আইন ও নিয়ম-কানুন দ্বারা তার জীবন হয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রিত, যা তাকে বেড়ে ওঠার পথে পঙ্গু করে দেয়। তার সম্ভাবনাগুলো ঝাপসা করে ফেলে এবং তার জীবনের বিকাশকে করে দেয় রুদ্ধ।’
দক্ষিণ আফ্রিকার এই চরম বর্ণবাদী নীতিই ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের দারিদ্র্যের প্রধান কারণ। ম্যান্ডেলা যখন জোহানেসবার্গে ল’ ফার্মে কেরানির কাজ করার পাশাপাশি পড়
No comments