আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত নিন্দা করা রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের জঙ্গিপনা



আদালত অবমাননার দায়ে জামায়াতে ইসলামীর তিন নেতার দণ্ড লাভের প্রতিবাদে সারা দেশে হরতাল, গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল হামলার মতো সহিংসতায় লিপ্ত হওয়ার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
এটা একটা উদ্বেগের বিষয় যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের ‘আন্তর্জাতিক মান’ নিয়ে ভীষণ বিচলিত, তারা জামায়াতি শ্বেতসন্ত্রাস সম্পর্কে কতটা বিচলিত বোধ করে, তা স্পষ্ট নয়।
জামায়াতের প্রতিবাদ করার অধিকার আমরা অবশ্যই স্বীকার করি। কিন্তু তারা প্রতিবাদের গণতান্ত্রিক সীমারেখা মানছে কোথায়? জামায়াত ক্রমাগতভাবে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিজেদের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে চলেছে। আদালত অবমাননার দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের পক্ষে সারা দেশে হরতাল পালনের মতো মহা উপদ্রব বাংলাদেশে এর আগে দেখা যায়নি। এটা লক্ষণীয় এবং অপ্রত্যাশিত ঘটনা যে জামায়াতের প্রধান মিত্র বিএনপির একজন মুখপাত্র বলেছেন যে তাঁরা এই হরতালে জামায়াতকে সমর্থন দেননি। এটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ না হলেও মনে করা যেতে পারে যে বিএনপি দেরিতে হলেও স্বাধীনতাবিরোধী এই গোষ্ঠীর সঙ্গে নিজেদের কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখার গরজটা অনুভব করছে।
এটা ভেবে দেখার সময় এসেছে যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে বিদেশি বন্ধুদের যারা অতিশয় উদ্গ্রীব, তারা জামায়াতি প্রতিবাদের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে আদৌ উদ্বিগ্ন কি না। ঢাকায় তথ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপের পর গতকাল সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জামায়াতিরা পুলিশের গাড়িতে ককটেল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ওই রায়ে ক্ষুব্ধতার কারণে তাদের সামনে আপিলের পথ খোলা ছিল। কিন্তু সে পথে না গিয়ে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না।
আইন-আদালতের প্রতি জামায়াতের এই চরম অবজ্ঞা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। ঘটনা ঘটানোর আগেই সন্ত্রাসীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিতে হবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, সরকারের মন্ত্রীরা বক্তৃতা মঞ্চে যতটা সোচ্চার, সন্ত্রাস দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ততটাই নিষ্ক্রিয় দেখা যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.