অনলাইন থেকে-বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার

গুড মর্নিং। বাংলাদেশের শ্রমিক প্রসঙ্গ নিয়ে চেয়ারম্যান মেনেনদেজ, র‌্যাংকিং মেম্বার কোর্কার ও কমিটির সব সদস্যের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়ায় আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
আজ সকালে অ্যাসোসিয়েট ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি বিলের সঙ্গে কথা বলতে পেরেও আমি সম্মানিত বোধ করছি। গত এপ্রিলে রানা প্লাজার মর্মন্তুদ ঘটনা ও নভেম্বরে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের পর বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার নিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। এ নিয়ে আপনাদের আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। আমার কাছে একটি দীর্ঘ বিবৃতি রয়েছে, আপনাদের অনুমতিক্রমে আমি তা রেকর্ডের জন্য সাবমিট করব। শ্রমিক-সংক্রান্ত ব্যাপারে সম্পৃক্ততা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে আমাদের ক্রমবর্ধমান অংশীদারির ক্ষেত্রে একটি বড় অধ্যায়। প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষরিত জলবায়ু, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সংহতি ও সংযোগ উন্নয়ন উদ্যোগে বাংলাদেশ আমাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে। গত দুই দশকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। এ ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে তৈরি পোশাক শিল্প। এই শিল্প সফল হওয়ার পরও তাজরীন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজার ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়েছে, সেখানে সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। আমাদের লক্ষ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জনে অব্যাহতভাবে সহায়তা দিয়ে যাওয়া। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে দেখা গেছে, বাংলাদেশে রপ্তানি খাতের প্রবৃদ্ধি নিরাপদ ও ভালো কর্মপরিবেশ তৈরির মধ্য দিয়ে আসছে না। গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে জোর দিয়ে বলেছেন, সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা ও শ্রমিক অধিকারের অগ্রগতিতে দুর্বলতা এবং নিরাপত্তা বাংলাদেশের ব্র্যান্ডের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে এবং দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অবস্থার পরিবর্তন করে শ্রমিক অধিকার ও কর্মপরিবেশকে একটি টিকে থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করতে। ৮ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিকবিষয়ক প্রতিনিধি বারবারা শেইলর, আমি ও আরো কয়েকজন ইউএসটিআর সহকর্মী এবং আমাদের শ্রমবিভাগ মিলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের একটি সম্মেলন আয়োজন করেছি। আমরা তাঁদের একের সঙ্গে অন্যের সমন্বয় করার আহ্বান জানিয়েছি। শ্রমিকদের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের কমকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছি এবং স্বাধীন নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপণ পরিদর্শকদের সহায়তা করতে বলেছি। সবচেয়ে ভালো প্র্যাকটিস করা যেসব কম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে তাদের ব্যাপারে আমার পেশ করা লিখিত জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছি।
বাংলাদেশ এখন ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় সময় কাটাচ্ছে। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা সম্প্রতি গঠিত পোশাক শিল্প ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এ শ্রমিকরা তাঁদের সফলতার কথা মজিনাকে জানিয়েছেন। ফ্যাক্টরি ইউনিয়ন করার পর কর্মক্ষেত্রে, বিশেষ করে পরিচ্ছন্ন খাবার জায়গা, বৈদ্যুতিক জঞ্জালমুক্ত রাখা ও বহির্গমনের পথ নির্বিঘ্ন রাখার বিষয়গুলোতে উন্নতি আসছে। তাদের প্রচেষ্টার ফলে শ্রমিক বিষয়ে আমূল পরিবর্তনের গুরুত্বটি দেখা যাচ্ছে। এখনো আরো অনেক কিছু করা বাকি রয়েছে। আমি আশা করি, বাংলাদেশ তার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাবে এবং শ্রমিক অধিকারকে শক্তিশালী করবে; কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ঘটাবে। এই প্রশাসন দেখতে চায় বাংলাদেশ সফল হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে এখানে এবং দেশের বাইরে যুক্ত থাকব প্রচেষ্টাগুলোকে সফল করতে সহায়তা প্রদানের জন্য। আবারও আমি আপনাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আগ্রহকে সমর্থন করছি এবং আমি সানন্দে আপনাদের প্রশ্নগুলো নিতে চাই।
রবার্ট ওব্লেক, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের ফরেন রিলেশন কমিটির সামনে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর দেওয়া ভাষণটি প্রেস রিলিজ আকারে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভাষান্তর : মহসীন হাবিব

No comments

Powered by Blogger.