হলমার্ক জালিয়াতির ফাঁদে আরও ৩৫ ব্যাংক আটকে গেছে by মহিউদ্দিন আহমেদ

 হলমার্ক গ্রুপের অর্থ জালিয়াতির ফাঁদে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে পা দিয়েছে আরও ৩৫টি ব্যাংক। সরকারী ৬টি, বিদেশী ৫টি এবং বেসরকারী ২৫টি ব্যাংক থেকে হলমার্ক গ্রুপর বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে স্বীকৃতিপত্র কেনার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১২শ’ ৮৭ কোটি টাকা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে এমন ভয়াবহ চিত্র ধরা পড়েছে। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কোন কর্মকর্তা জড়িত আছে কিনা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জনকণ্ঠকে এ সংবাদ জানান। সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে কয়েকটি গ্রুপ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাক ঋণের নামে আত্মসাত করার অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরু করে চলতি বছরের জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে। ছয় সদস্যের টিম অনুসন্ধানকালে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালনাপর্ষদের ১১ সদস্য, হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, জিএম তুষারসহ মোট ৭৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অনুসন্ধান শেষে ২ অক্টোবর দুদকে আংশিক প্রতিবেদন জমা দেয় অনুসন্ধানকারী টিম। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভুয়া এলসির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ইনল্যান্ড বিল পার্সেজের মাধ্যমে এক হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে হলমার্ক গ্রুপ। সব টাকাই হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে আত্মসাত করে। ওই ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় ১১টি মামলা দায়ের করে দুদক। ৭ জন হলমার্ক গ্রুপের আর বাকি ২০ আসামি হচ্ছে সোনালী ব্যাংকের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা। বাকি ১২শ’ ৮৭ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে ২৬টি ব্যাংক থেকে নেয় বলে হলমার্ক গ্রুপের কর্মকর্তারা দুদকের রিমান্ডে স্বীকার করেন। কিন্তু দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পারে ২৬টি ব্যাংক নয়, ৩৬টি ব্যাংক থেকে তারা ওই টাকা নেয়। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি, জনতা ব্যাংক থেকে ৩১৫ কোটি, রূপালী ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি, বেসিক ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি ও কৃষি ব্যাংক থেকে ২ কোটি টাকা। বিদেশী ব্যাংক স্ট্রেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে ৩ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান থেকে ৮ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে ২ কোটি, ব্যাংক আল ফালাহ থেকে ২ কোটি টাকা, এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা নেয় হলমার্ক গ্রুপ। এছাড়া বেসরকারী প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ১০, ন্যাশনাল ব্যাংক ২০ উইসিবিএল ব্যাংক ১৫, ওয়ান ব্যাংক ৩০, সিটি ব্যাংক ১০, উত্তরা ব্যাংক ২০, প্রাইম ব্যাংক ৫, ইসলামী ব্যাংক ১৫, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ২৫, যমুনা ২৫, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১১০, আল আরাফাহ ২, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ৩০, এনসিসি ব্যাংক ২৫, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১০০, এক্সিম ব্যাংক ৫, আইএফআইসি ব্যাংক কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ২ লাখ, পূবালী ব্যাংক ১৫ কোটি, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১৫ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ২ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ১৫ কোটি এবং এবি ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৫ কোটি টাকার মতো।

No comments

Powered by Blogger.