বিটিভির সেই ৪ কর্মকর্তার লাশ গুমের মামলাটি ফের সচল হচ্ছে by ফজলে নোমানী

৭৫-এর ৭ নবেম্বর বিটিভির চার পদস্থ কর্মকর্তাকে সেনা সদস্যদের সহায়তায় কুচক্রী মহল নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার মামলাটি আবারও দীর্ঘদিন পরে সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২৮ জানুয়ারি মামলার শুনানির নির্দিষ্ট দিন ধার্য হলেও আসামিপৰ সময় চেয়ে আবেদন করায় ১৪ ফেব্রম্নয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন আদালতে সাৰ্য দেয়ার জন্য বিটিভির তৎকালীন মহাপরিচালক জামিল চৌধুরী ও সাবেক জেনারেল ম্যানেজার মোসত্মফা মনোয়ার এবং সেদিন নিহত বিটিভির উপমহাপরিচালকের স্ত্রী মিসেস আনোয়ারা আলম এবং তাঁর ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী স্বপনকে আদালতে উপস্থিত থাকতে সমন জারি করা হয়েছে।
'৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর কতিপয় লোভী অফিসার মারফত যে চেন অব কমান্ড ভাঙ্গার ঘটনা ঘটে তারই ধারাবাহিকতায় কু্য এবং পাল্টা কু্যর মাঝে পড়ে বহু বেসামরিক নাগরিক হত্যাকা-ের শিকার হন। ৭ নবেম্বর বিভিন্ন বেসামরিক লোকজনের মধ্যে বিটিভির উপমহাপরিচালক মনিরম্নল আলম, চীফ এ্যাকাউন্ট অফিসার আকমল খান, এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার এএফএম সিদ্দিক এবং ক্যামেরাম্যান ফিরোজ কাইয়ুম চৌধুরীকে হত্যার পর রামপুরা টিভি ভবনের পেছনের খালে বুকে ইট বেঁধে লাশ ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল। তিন মাস পর রামপুরার খাল থেকে কঙ্কাল উদ্ধার হলে নিহতের পরিবার লাশ শনাক্ত হবার পর সকলের পৰে বাদী হয়ে আকমল খানের স্ত্রী মনোয়ারা আকমল খান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। যা পরবর্তীতে অদৃশ্য হাতের ইশারাতে থেমে যায়।
বিটিভির ওই চার কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর বিচার প্রক্রিয়া শুরম্ন হলে এর দুই আসামি হাবিলদার আবুল বাশার এবং হাবিলদার মাসুদ রানা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছিলেন। এরপরও মামলাটি থেমে যাওয়া নিয়ে ২০০৯ সালের ৬ নবেম্বর জনকণ্ঠে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। যার প্রেৰিতে সরকার আবার মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে নিহত কর্মকর্তাদের পরিবারের পৰ থেকে জনকণ্ঠকে জানানো হয়। ২৮ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের আদালত-১ এ দীর্ঘ চার বছর পর আবার মামলাটির শুনানি তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০০৫ সালের ৫ মে মামলাটির আসামিরা নিম্ন আদালতে সাৰ্যগ্রহণ চলাকালে হাইকোর্টে মামলাটি স্থগিতের আবেদন করে প্রথমে এটি স্থগিত করে। পরবর্তীতে 'কোয়াস' করে এই মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম বাগোজা, আব্দুল আউয়াল সরকার এবং লুৎফর রহমান তালুকদার মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়ে নেন। সেই থেকে মামলাটি স্থগিতই ছিল।
নিহতদের পরিবারের পৰ থেকে বিটিভির উপমহাপরিচালক মনিরম্নল আলমের শ্যালক স্বপন জানান, মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয়ায় তাঁরা কোয়াসের বিরম্নদ্ধেও এ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে পদৰেপ নেবেন। বিটিভির উচ্চপদস্থ চার কর্মকর্তার হত্যা মামলা (মামলা নং-৩৭৮২/০৩ ) থেকে প্রধান তিন আসামির 'কোয়াস' করে অব্যাহতি নেয়া প্রসঙ্গে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জনকণ্ঠকে বলেন, কোয়াসের বিরম্নদ্ধে কোন পদৰেপ নিতে হলে প্রথম পদৰেপ হবে সুপ্রীমকোর্টে আপীল দায়ের করা।

No comments

Powered by Blogger.