ধর্মান্ধতা জঙ্গীবাদ অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার- একুশের মাসে সাংস্কৃতিক জাগরণ

 আবার এসেছে ফেব্রুয়ারি। জেগেছে বাঙালী। কারণ এটা বাঙালীর একুশের মাস, ভাষার মাস; জাগরণের মাস। এ মাস এলেই একুশের চেতনায় দুর্মম হয়ে ওঠে বাঙালী। সোচ্চার হয়ে ওঠে সকল অন্যায়, অত্যাচার ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে।
কৃষ্ণপৰকে জয় করতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ওঠে সাংস্কৃতিক জাগরণ। শুধু ফেব্রম্নয়ারিকে কেন্দ্র করেই নয়, এ জাগরণ শুরম্ন হয় বিজয়ের মাস ডিসেম্বর থেকে। চলে টানা বাংলা নববর্ষের মাস বৈশাখ (এপ্রিল) পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক নানা উৎসবে জমজমাট থাকে এ সময়টি। তারই ধারাবাহিকতায় এখন রাজধানীতে চলছে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ সোমবার থেকেও শুরু হচ্ছে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান।
লোকসঙ্গীত উৎসবের সমাপনী সপ্ত লোকসাধক স্মরণে শিল্পকলা একাডেমীতে ছিল তেমনি একটি অনুষ্ঠান। সোঁদা মাটির গন্ধ মাখা গানে টানা ৭ দিন মুখরিত ছিল একাডেমী প্রাঙ্গণ। প্রতিদিনই এখানে গেয়েছেন প্রত্যনত্ম অঞ্চলের বাউল সাধক ও শিল্পীরা। লোকসঙ্গীত উৎসব উপলৰে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রানত্ম থেকে রাজধানীতে সমবেত হয়েছিলেন তাঁরা। রবিবার ছিল উৎসবের শেষ দিন। এদিন কথা ও গানে স্মরণ করা হয় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্কে। এ সাধক পুরম্নষের জীবন ও গানে ফুটে ওঠা দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন ড. আবুল হাসান চৌধুরী। একাডেমীর মহাপরিচালক কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত ও নৃত্য বিভাগের পরিচালক মাহমুদ সেলিম। পরে লালনের গান পরিবেশন করেন প্রখ্যাত শিল্পী ফরিদা পারভীন। অন্য গায়ক-গায়িকাদের মধ্যে ছিলেন পাগলা বাবলু, রম্নপু খান, তামান্না নিগার টুলী, মনোয়ারা বেগম ও মনোয়ারা বেগম মোনা। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন নন্দন কলা কেন্দ্রের শিল্পীরা। আরিফ দেওয়ান ও শহীদ দেওয়ানের দলীয় পরিবেশনাও এদিন দারম্নণ মুগ্ধ করে শ্রোতাদের।
এর আগে আয়োজনের বিভিন্ন দিনে স্মরণ করা হয় শাহ আবদুল করিম, রাধারমণ দত্ত, বিজয় সরকার, হাছন রাজা, জালাল খাঁ, কবিয়াল রমেশ শীলকে। প্রতিদিন একজন বাউলের ওপর অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ আলোচনা। বাউলদের নিজ নিজ অঞ্চলের শিল্পীরা উৎসবে প্রকৃত সুরে পরিবেশন লোককবিদের গান। প্রশংসনীয় এ উৎসব নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হবে বলে একাডেমীর পৰ থেকে জানানো হয়েছে।

জাতীয় কবিতা উৎসব শুরম্ন আজ
দেশী-বিদেশী কবি ও কবিতাপ্রেমীদের অংশগ্রহণে আজ সোমবার থেকে শুরম্ন হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব। অন্যান্য বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী চত্ব্বরে এ মিলনমেলার আয়োজন করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। দু'দিনব্যাপী আয়োজনে বিভিন্ন দেশের কবিসহ কয়েক শ' কবি উপস্থিত থাকবেন। স্বরচিত কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, সেমিনার ছাড়াও প্রাণবনত্ম আড্ডায় মুখরিত থাকবে উৎসব প্রাঙ্গণ। এবারের উৎসবের সেস্নাগান_ 'নতুন কবিতা নতুন সময়।' উৎসব উদ্বোধন করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। এ উপলৰে সকালে বের হবে কবিদের শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি টিএসসি, শহীদ মিনার, জাতীয় কবির মাজার হয়ে উৎসবস্থলে এসে শেষ হবে।
ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কবিরা এ উৎসব থেকে সরকারের প্রতি ধর্মান্ধ মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ নিপাত করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জানাবেন বলেও জানালেন আয়োজকরা।

আজ বই দিবস পালন করবে বুক কাব
বাংলাদেশ বুক কাবের উদ্যোগে আজ সোমবার পালন করা হবে ১৪তম বই দিবস। এ উপলৰে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিৰামন্ত্রী ডা. আফসারম্নল আমিন। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক কামাল লোহানী ও নাট্যজন ম. হামিদ। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শেখ আকরাম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শেখ উৎসব আহ্বায়ক মশিউর রহমান। আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্য শিৰাবিদ অধ্যাপক ড. আবুল হাসান শামসুদ্দিন স্মৃতি চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। শহীদ মিনার চত্বরে সকাল ৯টা ুথেকে সাড়ে ৯টা পর্যনত্ম সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে আগ্রহীরা।

No comments

Powered by Blogger.