স্বেচ্ছা কারাবরণে তৈরি হোন নিজামী

 আইনমন্ত্রীর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণার প্রেৰিতে দেশের ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে সরকারবিরোধী ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াত। মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিসত্মারিত কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
মহানগরী জামায়াত আয়োজিত এক সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মুসলমানদের ঈমান ও আকিদার উপর আঘাত উলেস্নখ করে ওলামা-মাশায়েখদের ব্যাগ গুছিয়ে রেখে স্বেচ্ছায় কারাবরণের জন্য প্রস্তুত থাকারও অহ্বান জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সফরকে সফল ও ফলপ্রসূ দাবি করারও তীব্র সমালোচনা করা হয়। জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত বক্তব্যকে "বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানোর শামিল" বলে মনত্মব্য করেছেন। ব্যক্তিগত পুরস্কার অর্জন এবং ভারত সরকারকে খুশি করার ৰেত্রে তিনি সফল হলেও দেশের স্বার্থ সংশিস্নষ্ট বিষয়ে এই সফরে তার কোন সফলতা নেই বলে উলেস্নখ করা হয়।
রাজধানীর কমলাপুরে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে রবিবার বিকালে এই ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে নিজামী বলেন, এদেশে কওমী মাদ্রাসা শিৰা ব্যবস্থার ওপর আঘাত হেনে এবার পাশর্্ববতর্ী দেশের প্রেসক্রিপশন মতো, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে সরকার। অথচ যাদের পরামর্শে তিনি এটা করছেন তাদের দেশসহ পৃথিবীর অর্ধশতাধিক দেশেই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রয়েছে। তিনি উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তোলেন, এ দেশে যদি কমিউনিস্ট রাজনীতি থাকতে পারে তাহলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিও থাকবে। নচেৎ ওলামা সমাজ বুকের রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়ে হলেও তাদের দাবি আদায়ে পিছপা হবে না। আদালতে বিচারাধীন বিষয় হলেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সম্পর্কে সরকারের আইনমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন। এটি যদি প্রধান মন্ত্রীর কথা না হয়ে থাকে তাহলে তাকে তিনি প্রকাশ্যে বিষয়টি পরিষ্কার করার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, বেশ কিছু মিডিয়াতে আইনমন্ত্রীর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের পরিকল্পনার কথা প্রচারিত হবাার পর ওলামাদের বলিষ্ঠ প্রতিবাদে ভীত হয়ে তিনি এখন কথা ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। এসব না করে তিনি মন্ত্রীকে স্পষ্ট ভাষায় ভুল স্বীকার করারও আহবান জানান। তিনি বলেন, ৰমতায় গেলে ইসলাম ধর্মের বিষয়ে কোন বৈরী সিদ্ধানত্ম নেবেন না_এই প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে ৰমতায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন দেশবাসীর কাছে করা ওয়াদার বরখেলাপ করছেন। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান বক্তব্যের শুরম্নতে একটি বিশেষ দলের সঙ্গে থাকা ওলামাদের দল সম্পর্কে অশস্নীল মনত্মব্য করে তা মওলামা ভাসানীর পীরের কথা বলে মনত্মব্য করেন। এসব দলকে নাকি ভাসানী "শয়তানের অ-কোষ" মনত্মব্য করেছিলেন। যাদের কাজই হচ্ছে ঝুলে থাকা। এ প্রসঙ্গে ভাসানীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি নাকি বলেন, এটি তার কথা নয়, তার পীর মুজাদ্দেদী আলফেসানির কথা। এক শ্রেণীর আলেমকে তিনি শয়তানের দোসর বলে মনত্মব্য করে তাদের বর্জন করে ইসলামের স্বার্থে সকল আলেম ওলামাকে সমসত্ম বিভেদ ভুলে একত্রিত হবার আহ্বান জানান। দলের সিনিয়র আমির আব্দুস সোবাহান বিশোদ্গার করেন দেশের মিডিয়ার ওপর। মিডিয়াকে ইসলামবিরোধী তৎপরতায় যুক্ত বলে অভিযুক্ত করে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধেরও আহ্বান জানান। অন্যতম নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসেন সাঈদী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তার মাথায় পট্টিও দেখা যায়, উনি নাকি নিয়মিত নামাজ-রোজা করেন, তসবিহ টেপেন, কোরান তেলাওয়াত করেন, তাহলে ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র কেন করেন? সারাদেশে ইসলামী কর্মকা-ের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করতে করতে এই সরকার এখন আলস্নাহ এবং তাঁর রাসূলের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করতে ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে বলে তিনি মনত্মব্য করেন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ তাঁর বক্তব্যে- দ্বীনের ওপর, মসজিদের ওপর আঘাত আসায় প্রতিঘাত করার জন্য তৈরি থাকতে সকলকে আহ্বান জানান। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে জামায়াতের পৰ থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মহানগর জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দও বক্তব্য প্রদান করেন।

No comments

Powered by Blogger.