কোয়েটায় বোমা হামলা-'সেনাবাহিনী নিরাপত্তার ভার নেবে, এরপর লাশ দাফন'

কোয়েটার নিরাপত্তা ভার সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ দাফন করবে না বলে জানিয়েছে শিয়াপন্থী হাজারা সম্প্রদায়ের লোকজন। গত বৃহস্পতিবার বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার দুটি স্থানে পৃথক বোমা হামলায় ১১৬ জন নিহত হয়।
এর মধ্যে ৮৬ জনই হাজারা গোষ্ঠীর। এর পর থেকেই ওই গোষ্ঠীর লোকজন অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনাকে 'নির্মম' বলে অভিহিত করেছে।
বৃহস্পতিবার কোয়েটার আলমদার রোডের একটি স্নুকার ক্লাবে ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই দফা এবং বাচা খান এলাকায় আরেক দফা হামলা হয়। স্নুকার ক্লাবের হামলায় ১০৪ জন এবং বাচা খান চকে হামলায় মারা যায় ১২ জন। একই দিন সোয়াতে পৃথক হামলায় মারা যায় ২২ জন। সুনি্নপন্থী লস্কর-ই-জাংভি স্নুকার ক্লাবে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বেলুচিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বৃহস্পতিবারের হামলার প্রতিবাদে দুই দিন ধরে হাজারা গোষ্ঠী বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট করছে। তাদের অভিযোগ, প্রাদেশিক সরকার শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। এ জন্যই তারা ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি কোনো মন্তব্য করেননি।
স্থানীয় শিয়া পার্টির নেতা হাশিম মাওসাউই বলেন, 'জনগণের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সেনাবাহিনী কোয়েটার নিয়ন্ত্রণের ভার নেবে_কর্তৃপক্ষ এ আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ করব।'
বেলুচিস্তানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাশিম গিলজাই গতকাল শনিবার বলেন, বিক্ষোভকারীরা কমপক্ষে ৬০টি কফিন নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করছে। দাবি না মানা পর্যন্ত লাশ দাফন করবে না বলে জানিয়েছে তারা। 'সমস্যা সমাধানে গত রাতে (শুক্রবার) আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি, আজও কথা বলব'_জানিয়েছেন এক নেতা
প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ কোয়েটার নিরাপত্তা ঠিক রাখতে আধা-সামরিক বাহিনীকে (এফসি) এক মাসের জন্য পুলিশের সমান ক্ষমতা দিয়েছেন। ফলে তারা ঝটিকা অভিযান, তল্লাশি ও প্রয়োজনে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে।
বিস্ফোরণের পর কোয়েটার পরিস্থিতি জানতে প্রাদেশিক গভর্নর জুলফিকার মাগসিকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি, জানমালের নিরাপত্তা বিধানে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।
এদিকে গতকাল কোয়েটার হাজার গানজি এলাকায় থাকা ন্যাটো বাহিনীর রসদবাহী গাড়ির টার্মিনাল লক্ষ্য করে রকেট হামলা হয়েছে। বোমা হামলার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বলেন, 'আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছি। এ ধরনের নির্মম ও অমানবিক হামলার নিন্দা জানাই আমরা।'
দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ : 'সরকারের দুর্নীতির' বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতা তাহির উল কাদির সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে শান্তির্পূণ এ বিক্ষোভে লাখ লাখ মানুষ যোগ দেবে বলে আশা করছেন তিনি। সরকার বলছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে। সূত্র : ডন, বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.