প্রতীক্ষার জয়ের পরও ক্ষুব্ধ সিটি

অপেক্ষা যত দীর্ঘই হোক, তার শেষ আছে। একেক করে যেন অপেক্ষার পালা ঘুচছে ম্যানচেস্টার সিটির! ৪৪ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে গত মৌসুমে লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছে সিটি।
পরশু আর্সেনালের মাঠে ৩৭ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে পেল জয়, জয়টা ২-০ গোলের। যদিও শীর্ষে থাকা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সাত পয়েন্টের ব্যবধানে তারা দ্বিতীয় স্থানে। পরশু সিটি মাঠে নামার আগেই লিভারপুলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এগিয়ে যায় ১০ পয়েন্টে। আর্সেনালের মাঠে গিয়ে সিটি লিগে সর্বশেষ জয় পেয়েছিল সেই ১৯৭৫ সালে। এরপর ২৭ ম্যাচ খেলেও উত্তর লন্ডনের ক্লাবটির মাঠে জয় পায়নি। ইতিহাস ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে শিরোপা লড়াই থেকে এক রকম ছিটকেই পড়তে হতো। সিটি তাই পয়েন্ট হারানোর কথা ভাবতেই পারেনি।
অবশেষে তারা জয়-খরা কাটাল জেমস মিলনার ও এডিন জেকোর গোলে। এই জয়ে সিটি শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকল ভালোভাবেই। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত রবার্তো মানচিনি বলেছেন, সিটিকে এখনো বাতিলের খাতায় ফেলা যাবে না, ‘ইউনাইটেড সত্যিই শক্তিশালী। এই মুহূর্তে তারা খেলছেও দারুণ। কিন্তু মৌসুমটা অনেক লম্বা। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো, শেষ পর্যন্ত তাদের কাছাকাছি থাকা। আর্সেনালের মাঠে জয়ের ব্যাপারে আমরা চাপে ছিলাম। তবে সাত, আট কিংবা নয় পয়েন্টে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। গত মৌসুমের সমান কিছু করা কঠিন। তবে মাঝেমধ্যে এমনটা ঘটতেই পারে।’
অ্যালেক্স ফার্গুসন আবার পয়েন্ট তালিকায় কে এগিয়ে আর কে পিছিয়ে, এখনই সেই আলোচনায় যেতে রাজি নন। ইউনাইটেড কোচ বরং লিভারপুলের বিপক্ষে জয়টাই উপভোগ করছেন। ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দুই দলের লড়াই বলে ইউনাইটেড-লিভারপুল ম্যাচটা অন্য রকম মর্যাদা পায়। ফার্গুসনের কাছে আরও বেশি। ১৯৮৬ সালে ফার্গি যখন ইউনাইটেডের দায়িত্ব নেন, ইংলিশ ফুটবলে তখন লিভারপুলের রাজত্ব। এই স্কটিশ এক রকম ঘোষণার সুরেই জানিয়েছিলেন ‘লিভারপুলকে সিংহাসনচ্যুত করা’ই তাঁর লক্ষ্য। সেই লিভারপুলকে আসলেই টেনে নামিয়েছেন ফার্গি। এখন ধুঁকতে থাকা লিভারপুলকে হারিয়েও উচ্ছ্বসিত ইউনাইটেড কোচ, ‘এই ম্যাচে জয় পাওয়াটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পয়েন্ট তালিকায় কে কোথায়, সেটা কোনো ব্যাপার নয়।’
এদিন এমিরেটসে ইতিহাস বদলের ইঙ্গিতটা সিটি পেয়ে থাকবে শুরুতেই। ম্যাচের নয় মিনিটেই এডিন জেকোকে ফাউল করায় লালকার্ড পান আর্সেনাল ডিফেন্ডার কসিয়েনলি। কিন্তু প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি বসনিয়ান স্ট্রাইকার। পরের ৬৬ মিনিট সংখ্যাগত সুবিধা নিয়ে আর্সেনালের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সিটি। ২১ মিনিটে মিলনার ও ৩২ মিনিটে জেকোর গোলে এগিয়ে যায় তারা। এই ব্যবধান আর ঘোচাতে পারেনি আর্সেনাল। যদিও একটা সুযোগ এসে গিয়েছিল ৭৫ মিনিটে, যখন জোড়া পায়ে উইলশেয়ারকে ট্যাকল করায় সরাসরি লালকার্ড দেখেন সিটি অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানি। তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার মুখে এই ডিফেন্ডার। সিটি হারলে ইংলিশ ফুটবল পরশু আলোড়িত হতো ওটা নিয়েই। কিন্তু জয়ের পরও সিটি শিবির ক্ষুব্ধ কোম্পানির ওই লালকার্ড নিয়ে। কারণ রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা গেছে, বৈধ ট্যাকল করেই বল কেড়ে নিয়েছিলেন কোম্পানি।
মানচিনি এই লালকার্ডের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সিটির কোচের ক্ষোভ, ‘এটা লাল কার্ড ছিল না, ফাউলই হয়নি!’ এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.