সিরিয়ায় জাতীয় ঐক্যের সরকারের ডাক রাসায়নিক অস্ত্রে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন বাশার!

সিরিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আল শারা জাতীয় ঐক্যের সরকারের ডাক দিয়েছেন। তার এ আহ্বানকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করা হয়েছে। ওদিকে সিরিয়ার সহিংসতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তুরস্ক একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়ার কাছে।
ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ২০১৩ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। এরপর দেশের ক্ষমতা নেবে বিরোধীদের সমন্বয়ে গঠিত ন্যাশনাল কোয়ালিশন। বিরোধীদের এ জোটকে এরই মধ্যে আরব ও পশ্চিমা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। তুরস্কের এ পরিকল্পনা নিয়ে গত ৩রা ডিসেম্বর ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তায়েপ এরদোগান।
মিডিয়ায় বলা হয়েছে, রাশিয়া এ পরিকল্পনাকে ‘গঠনমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে মনে করছে। ওদিকে প্রেসিডেন্ট আসাদ যদি তার দেশের রাসায়নিক অস্ত্রের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারান তাহলে সেক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ইসলামপন্থি কট্টর লোকজনের হাতে পড়তে পারে। বদমেজাজি কোন জেনারেল বা অন্য কোন অনিয়ন্ত্রিত গোষ্ঠীর হাতে পড়তে পারে। এরই মধ্যে যেসব স্থানে রাসায়নিক অস্ত্র রাখা হয়েছে তার একটি স্থাপনায় তা আর দেখা যাচ্ছে না বলে বিরোধী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি দাবি করেছে। এর পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট আসাদ তার রাসায়নিক অস্ত্রের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন অথবা হারানোর কিনারে এসে পৌঁছেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, এ অবস্থায় কি করণীয় তা নির্ধারণ করছে পেন্টাগন। শুক্রবার এমন আভাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন পানেটা। তবে কি সেই পরিকল্পনা সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত বলেননি। কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন- তারা এক্ষেত্রে ইসরাইল, জর্ডান, ন্যাটোর মিত্র ও তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। ওদিকে দেশকে গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা করতে সিরিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট লেবাননের একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। আল আকবার নামের ওই পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, এ সমস্যার সমাধান সিরিয়ানদেরই করতে হবে। তা হতে হবে একটি ঐতিহাসিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে। ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক এর আগে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, সিরিয়ায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে সরকার বা বিদ্রোহী কোন গ্রুপের পক্ষে বিজয় অর্জন করা সম্বণ নয়। তাই ঐতিহাসিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। সবাইকে সব রকম সহিংসতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গঠন করতে হবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সে সরকারকে দিতে হবে ব্যাপক ক্ষমতা। তার এ প্রস্তাবের জবাবে বিদ্রোহীরা বলেছে, তারা তার এ প্রস্তাবের ব্যাপারে উদার। তারা অন্তর্বর্তী সরকার চায়। এমনই একটি সরকার গঠনের প্রস্তাব অক্টোবরে দিয়েছিলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু।

No comments

Powered by Blogger.