পদ্মাসেতু নির্মাণের সব পথ বন্ধ হলো by মান্নান মারুফ

পদ্মাসেতুতে পরামর্শক নিয়োগে অনিয়মের মামলায় সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে বাদ দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা দায়েরের ঘটনায় পদ্মাসেতু নির্মাণের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিরোধী দলের রাজনীতিকরা।
এমনকি মহাজোটের শরিক দলগুলোর কোন কোন নেতাও এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

সোমবার দুপুরে ওই মামলা দায়েরের পর সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তারা এ অভিমত প্রকাশ করেন।

দুর্নীতিতে জড়িত রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়ে এ মামলা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, “বিশ্বব্যাংক যাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছে তাদের বাদ দিয়ে মামলা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। এ মামলায় তাদের আসামি করা উচিৎ ছিলো। তা না করায় এ সরকারের আমলে পদ্মাসেতু না হওয়ার চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা দেখা দিলো।”

তিনি বলেন, “এর ফলে দক্ষিণ অঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খা চুরমার হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সরকার তাদের নিজস্ব লোকদের বাঁচানোর জন্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়েছে। কোনভাবেই শুধু আমলাদের এতো বড় প্রজেক্টের দুর্নীতিতে জড়িত হওয়া সম্ভব নয়। সরকারের রাঘববোয়ালরা এর পেছনে ছিলো বলে এটা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সরকার লোকদেখানো ব্যবস্থা নিয়ে কেবল আমলাদের নামে মামলা করেছে। এটা জাতির সঙ্গে প্রবঞ্চনা।”

ভবিষ্যতে পদ্মাসেতুর দায় সরকার এড়াতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তরিকুল।

ঢাকা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, “যখন দুর্নীতির কথা প্রচার হচ্ছিলো তখনই মনে হচ্ছিলো পদ্মাসেতু আর হচ্ছে না। এখন দুই আবুলের  নাম বাদ দেওয়ায় ওই সম্ভাবনা আরো বেড়েছে। বিশ্বব্যাংক সহযোগিতা করবে বলে মনে হচ্ছে না।”

মহাজোটের অন্যতম শরিক এরশাদের জাতীয় পার্টির মহাসচিবি এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “বিশ্বব্যাংক যাদের সন্দেহ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ মুহুর্তে পদ্মাসেতুর সম্ভাবনার দ্বার বন্ধ হয়ে গেছে। এই যে অনিশ্চয়তা দেখা দিলো এর দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।”

তবে মামলার চার্জশিট দেওয়ার সময়ে নতুন আসামির নাম যোগ হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

তার দলেরই প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, “এ মামলার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে যে, পদ্মাসেতু আর এ সরকারের সময়ে হচ্ছে না।”

No comments

Powered by Blogger.