লিমনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা না নেওয়ার নির্দেশ

র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেন, তাঁর মা হেনোয়ারা বেগম, বাবা তোফাজ্জেল হোসেন ও বড় ভাই হেমায়েত হোসেন সুমনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ফোরকান হত্যা মামলা নেওয়ার আদেশ সংশোধন করেছেন আদালত।


রাজাপুর থানার ওসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান হত্যা মামলা গ্রহণের আদেশ সংশোধন করেন। ২৩ আগস্ট কথিত র‌্যাবের সোর্স ইব্রাহিম হাওলাদার আদালতে এ নালিশি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। আদেশ সংশোধনের ফলে হত্যা মামলাটি রাজাপুর থানায় লিপিবদ্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী।
লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য্য জানান, ঈদের দিন বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ইঁদুরবাড়ী সেতু এলাকায় ছবি তোলার সময় লিমন ও তাঁর পরিবারের ওপর হামলা চালায় ইব্রাহিম হাওলাদার। মারামারির খবর শুনে আসার সময় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরে ইব্রাহিমের শ্যালক ফোরকান হাওলাদার অসুস্থ হয়ে মারা যায়। ফোরকান অসুস্থ হয়ে হঠাৎ মারা যাওয়ার পর ২১ আগস্ট তার বোন লিলি বেগম হামলা ও ফোরকানের মৃত্যুর বিবরণ দিয়ে থানায় একটি আবেদন করেন। রাজাপুর থানা আবেদনটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
অপমৃত্যু মামলা দায়েরের বিষয়টি গোপন করে দুই দিন পর ২৩ আগস্ট ইব্রাহিম হাওলাদার বাদী হয়ে ফোরকানকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে একটি নালিশি মামলা করে। আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান অভিযোগ গ্রহণ করে রাজাপুর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের এ আদেশ গত ২৬ আগস্ট রাজাপুর থানায় পৌঁছায়। আদালতের আদেশ ও ফোরকানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যু মামলার বিষয় নিয়ে রাজাপুর থানার ওসি তোফাজ্জেল হোসেন গত ২৯ আগস্ট জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে একটি আবেদন করেন।
আবেদনে রাজাপুর থানার ওসি তোফাজ্জেল হোসেন উল্লেখ করেন, ফোরকান হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় লিলি বেগমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা লিপিবদ্ধ করা হয়। সে অনুযায়ী ফোরকানের মৃতদেহের সুরাতহাল এবং ময়নাতদন্ত করা হয়। চিকিৎসকদের দেওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও হাতে পাওয়া গেছে। তাই সার্বিক বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য আদালতকে অবহিত করা হলো।
রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, আবেদন করার পর আদালতের বিচারক বিষয়টি পর্যালোচনা করে নালিশি অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ সংশোধন করে অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.