আইনী লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ॥ ড. ইউনূস বৃহৎ শক্তি ও দাতাদের দিয়ে চাপ প্রয়োগ করছেন -৫১ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৫১ বিশিষ্ট নাগরিক। গণমাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া বিবৃতির এক প্রতিক্রিয়ায় ওইসব নাগরিক এ আহ্বান জানান। শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বর্তমান সরকার ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে একটা মতপার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারী চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী বয়সসীমা অতিক্রম করায় ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় তিনি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সরকারের সিদ্ধান্তকে আইনানুগ বলে রায় প্রদান করে। এতে বিষয়টি একটি আইনী মীমাংসায় সম্পন্ন হয়।
অতিসম্প্রতি সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের অধ্যাদেশ তৃতীয়বারের মতো যে সংশোধন এনেছে তা নিয়ে যে কেউ ভিন্নমত পোষণ করতেই পারে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে আইনী লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের সূত্রে বৃহৎ শক্তি ও দাতাগোষ্ঠীকে দিয়ে বাংলাদেশের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন। তাদের এই অবাঞ্ছিত চাপ প্রয়োগ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল, যা স্বাধীন দেশের কোন নাগরিকের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। আমরা আরও লক্ষ্য করছি যে, ড. ইউনূস এক বিবৃতিতে নতুন সরকার এসে এই অধ্যাদেশ পরিবর্তন করে গ্রামীণ ব্যাংককে পূর্বাবস্থায় প্রতিষ্ঠিত করবে বলে দেশবাসী, বিশেষ করে তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
আমরা আরও জানি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জরুরী অবস্থায় যখন দুই নেত্রীকে গ্রেফতার করে মাইনাস টু ফরমুলা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল সে সময় ড. ইউনূস একটি নতুন দল গঠন করেছিলেন। বর্তমান দেশে একটি নির্বাচিত সরকার বহাল থাকা অবস্থায় তিনি নতুন সরকার বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট করেননি। তাই বিবৃতিতে অতীতের মতো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার যে কোন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হচ্ছেন অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, সৈয়দ শামসুল হক, শিল্পী হাশেম খান, কামাল লোহানী, শামসুজ্জামান খান, বিচারপতি (অব) মেজবাউদ্দিন আহমেদ, উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক, উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, অধ্যাপক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, কবি বেলাল চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, সেলিনা হোসেন, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি মহাদেব সাহা, ড. হারুন অর রশিদ, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ড. বজলুল হক, স্থপতি রবিউল হুসাইন, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ড. আবুল বারকাত, শাহরিয়ার কবির, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, ড. মুহাম্মদ সামাদ, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শিল্পী জামাল আহমেদ, অধ্যাপক শফিকউজ্জামান, ডা. মাহমুদুল হাসান, ডা. কামরুল হাসান খান, ডা. ইকবাল আর্সানাল, ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. শহিদ আকতার হুসাইন, কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী, এ্যাডভোকেট শ.ম. রেজাউল করিম, ড. নাসরিন আহমাদ, ড. কাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, শিল্পী নিসার হোসেন, ড. নাজমা শাহীন, ড. আখতারুজ্জামান, ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, ড. ফিরোজা ইয়াসমিন, ড. একেএম গোলাম রাব্বানী, ড. কামাল উদ্দিন, ড. জীনাত হুদা, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর সবুর ও গোলাম কুদ্দুছ।

No comments

Powered by Blogger.