আ.লীগের গণশোভাযাত্রা আজ-দলীয় মিছিলে যাবেন সরকারি কর্মচারীরা by রাহীদ এজাজ

আওয়ামী লীগের আজকের গণশোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন সরকারের কর্মচারীরা। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদসহ সরকারি কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন এই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেবে। তবে ১২ মার্চ বিরোধী দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।


গত সোমবার সচিবালয়ে এ-সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন একান্ত সচিব, যিনি একজন উপসচিব মর্যাদার কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মো. রুহুল আমিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ খাইরুল ইসলাম তাঁদের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হয়ে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের কিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
আজ বুধবার বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন শিখা চিরন্তন থেকে আওয়ামী লীগের গণশোভাযাত্রা শুরু হওয়ার কথা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী বক্তব্য দেবেন।
এ ব্যাপারে জানতে গতকাল বিকেলে খাইরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। বেশ কয়েকবার ফোন করার পরও তিনি সাড়া দেননি। এরপর খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব রুহুল আমিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনাব খাইরুল ইসলাম আমাদের বিএনপি আয়োজিত ১২ মার্চের কর্মসূচিতে অংশ নিতে বারণ করেছেন। কারণ, সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার মানে তো সরকারকে বিব্রত করা। আর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা তো এটা করতে পারেন না।’
রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদভুক্ত সাতটি সংগঠনের মধ্যে পাঁচটি নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে আজ আওয়ামী লীগের গণশোভাযাত্রায় অংশ নেবে। পাঁচ সংগঠন হচ্ছে: সচিবালয় স্টেনো টাইপিস্ট সমিতি, কম্পিউটার অপারেটর সমিতি, হিসাবরক্ষণ কর্মচারী সমিতি, সচিবালয় অফিস সহকারী সমিতি এবং সচিবালয় চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি।
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া যায় কি না—জানতে চাইলে রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর ভক্তরা এ কর্মসূচিতে যাচ্ছি। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি তো সরকারি কর্মসূচি। তাই এতে যোগ দিতে বাধা নেই।’
রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (খাইরুল ইসলাম) সোমবারের বৈঠকে উপস্থিত হয়ে আমাদের ৭ মার্চের কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে সংস্থাপনসচিব আবদুস সোবহান সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর দপ্তর থেকে বলা হয়, তিনি দেশের বাইরে আছেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আকবর আলি খান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধি, ১৯৭৯ প্রযোজ্য হবে। এ বিধির বাইরে কোনো কিছু করা ঠিক হবে না।
‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধি, ১৯৭৯’-এর বিধি ২৫-এর উপবিধি-১-এ বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে অথবা বাংলাদেশবিষয়ক কোনো ব্যাপারে অংশগ্রহণ করিতে, সাহায্যার্থে কোনো চাঁদা দিতে বা যেকোনোভাবে সহযোগিতা করিতে পারিবেন না।’

No comments

Powered by Blogger.