রাজধানীতে সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা

ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী (৪৩) গুলিতে নিহত হয়েছেন। গত সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর গুলশানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। দ্রুত তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।


জানা যায়, খালাফ বাংলাদেশে অবস্থানকারী সৌদি নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি দেখতেন। সৌদি দূতাবাস খালাফকে 'দ্বিতীয় সচিব' (সেকেন্ড সেক্রেটারি) হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মুস্তফা কামাল গতকাল বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রে খালাফের পরিচয় উল্লেখ আছে 'নন ডিপ্লোম্যাটিক স্টাফ'।
এদিকে এ হত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তদন্তকারী পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ধারণা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কোনো প্রভাবশালী মহল পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে কিংবা কাজটি ছিনতাইকারীরও হতে পারে। এদিকে ঘটনার রাতে একটি সাদা প্রাইভেট কারকে দ্রুত ওই এলাকা দিয়ে যেতে দেখেছেন কেউ কেউ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গুলির শব্দ শোনা কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীর ধারণা, খুনিরা ওই প্রাইভেট কারে করেই পালিয়ে যায়।
পুলিশের গুলশান অঞ্চলের উপকমিশনার লুৎফুল কবির বলেন, হত্যার কারণ এবং খুনিদের সম্পর্কে এখনো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্তের পর জানা যাবে।
তবে পুলিশের অন্য সূত্র জানায়, তদন্তে নেমে খালাফের রহস্যময় চলাফেরার আভাস পেয়েছে তারা। প্রতি রাতে ১১টার দিকে খালাফ বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেন। ফিরতেন রাত ২টা-আড়াইটার দিকে। এ সময়ে তিনি কী করতেন কার কাছে যেতেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর রহস্যময় চলাফেরার সঙ্গেও হত্যাকাণ্ডের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
এদিকে খালাফ নিহত হওয়ার খবরে অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক এম আল্লামা সিদ্দিক এবং চিফ অব প্রটোকল এম এ এস সাদিক গতকাল দুপুরে ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতাসহ অনেকেই শোক প্রকাশ করে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নিজামুল হক মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ১টার পর গুলশান দুই নম্বরের ১১৭ নম্বর সড়কের কনস্যুলেট অব পর্তুগাল ভবনের নিরাপত্তাকর্মী জুলফিকার আলী থানায় ফোন করে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা জানান। এসআই মোশারফ হোসেনসহ পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সোয়া ১টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খালাফকে উদ্ধার করে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে খালাফ মারা যান।
জানা যায়, সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে নিহতকে শনাক্ত করেন। তাঁকে উদ্ধার করার সময় তাঁর পরনে ছিল একটি সাদা ট্র্যাকস্যুট ও বেগুনি রঙের গেঞ্জি। পায়ে ছিল স্পোর্টস কেডস। ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল ফোন তিনি বাসায় রেখে জগিং করতে যান বলে জানা গেছে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, গুলশানে ঘটনাস্থলের কাছেই একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন ওই দূতাবাস কর্মকর্তা। তাঁকে কখন হত্যা করা হয় সে ব্যাপারে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে রাত ১টার পর পুলিশ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পায়। জগিংয়ে বের হওয়ার সময় খালাফ একটি পানির বোতল সঙ্গে রাখেন। প্রায় প্রতিরাতেই কখনো সাইকেলে, কখনো হেঁটে তিনি ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতেন। রাতে কখনো কখনো তিনি বারিধারার নতুন বাজার এলাকার জে ব্লকের একটি ক্লাবে যেতেন। ওই ক্লাবে বাংলাদেশে অবস্থানকারী সৌদি নাগরিকদের নিয়মিত যাওয়া-আসা ছিল। গত রাতেও জগিংয়ে বেড় হয়ে তিনি খুন হন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁকে ক্ষুদ্র অস্ত্র দিয়ে খুন করা হতে পারে। অনেকগুলো কারণ সামনে রেখে খুনের তদন্ত চলছে। এর মধ্যে ছিনতাই, পূর্ব শত্রুতা, ব্যক্তিগত বিরোধের বিষয়সহ অন্য আরো দু-একটি কারণ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার পরপরই কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি। তবে ঘটনার রাতে ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনে যাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে জানা গেছে, গুলশানের পর্তুগাল ভবনের পাশ দিয়ে চারটি রাস্তা চলে গেছে। এর মধ্যে খালাফ গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ২২/এ নম্বর বাড়ির চার তলায় একাই থাকতেন। বাসাটি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তাবেষ্টিত থাকে। আশপাশের সব বাসার অবস্থা একই। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে জগিং করতে বের হন খালাফ। রাত ১টার দিকে পর্তুগাল ভবনের দেয়ালের প্রাচীরের পাশে একটি ছোট গাছের নিচে ময়লার ড্রেনের পাশে তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
গতকাল সকাল থেকে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার ব্যাপারে আশপাশের ভবনের বাসিন্দা ও রাতে ভবনগুলোর নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে খুনের বিষয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ শুধু গুলির শব্দ শুনেছেন। একটি সাদা প্রাইভেটকার রাতে ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুত চলে যেতেও দেখেছেন কেউ কেউ। প্রত্যক্ষদর্শীরা শুধু বলছে, তাঁরা ওই গাড়িতে তিনজন লোক দেখেছেন। ঘটনার পর গোয়েন্দারা বিভিন্ন ব্যক্তির মতামত নেন। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ প্রতিবেদককে বলেন, খালাফকে একটি ক্ষুদ্র অস্ত্র দিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়ে থাকতে পারে। এ খুনের সঙ্গে ছিনতাইকারী অথবা কোনো প্রফেশনাল কিলারদের হাত থাকতে পারে। এমনকি সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে প্রভাবশালী মহলের কেউ এ খুনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
২২/এ নম্বর ভবনের নিরাপত্তাকর্মী তাপস রেমা কালের কণ্ঠকে বলেন, গত সোমবার সকালে খালাফ অফিসে যান এবং বিকেল ৪টার দিকে একই গাড়িতে ফেরেন। এরপর রাত ১১টার দিকে জগিং (নৈশভ্রমণে) করতে বের হন। রাত ১টার দিকে একটি সাদা প্রাইভেট কার দ্রুত চলে যেতে দেখেছেন তিনি। তবে খালাফ খুন হওয়ার বিষয়টি গতকাল সকালে তিনি জেনেছেন বলে দাবি করেন তাপস।
ওই ভবনের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, খালাফ আল আলী দুই বছর ধরে ছয় তালা ভবনের চার তলার এ-ফোর ফ্ল্যাটে থাকতেন। বাসায় তিনি একাই থাকতেন। একজন গৃহপরিচারিকা সকালে এসে বিকেল পর্যন্ত কাজ করে চলে যেতেন। সৌদি দূতাবাসের লোকজন ছাড়া তাঁর বাসায় কারো তেমন যাতায়াত ছিল না। গত সোমবার সকালে তাঁর গাড়িচালক আল আমিন তাঁকে আফিসে নিয়ে যান। এরপর বিকাল ৪টার দিকে তিনি অফিসের গাড়িতে বাসায় ফেরেন। তিনি রাতে কখনো সাইকেলে আবার কখনো হেঁটে জগিং করতে বের হতেন। ফিরতেন অনেক রাতে।
ওই ভবনের তৃতীয় তলার বাসিন্দা ড. জহির আহমেদ বলেন, খালাফ সাইকেল নিয়ে জগিংয়ে বের হতেন। তবে সাইকেলটি প্রায়ই নষ্ট পড়ে থাকত।
ড. জহিরের ছেলে স্কলাস্টিকা স্কুলের ছাত্র শাহ নাভিন আহমেদ বলে, 'সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমি প্রয়োজনীয় কাজে বাসা থেকে বের হই। নিচে নেমে দেখি উনি (খালাফ) সাইকেলের পাশে বসে কী যেন করছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে অল্প কিছুক্ষণ কথা হয়। আমি চলে যাই। উনি সাইকেল ঠিক করায় মনোযোগ দেন। রাত ১টার পর আমি সাইরেন বাজার শব্দ পাই। গতকাল সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর পাই।'
পাশের ২১ নম্বর ভবনের নিরাপত্তাকর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, 'সোমবার সন্ধ্যা থেকে আমার ডিউটি ছিল। আমি রাত ১টার দিকে বাথরুমে গিয়ে একটি শব্দ পাই। গুলির শব্দ মনে হওয়ায় বাথরুম থেকে তাড়াতাড়ি বের হয়ে বাইরে এসে দেখি, একটি সাদা প্রাইভেট কার দ্রুত পশ্চিম দিকে চলে যাচ্ছে। এরপর পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে সাইরেন বাজে। এর পরই পুলিশের গাড়ি এসে আমার বাসার আদূরেই পর্তুগাল দূতাবাসের দেয়ালের পাশ থেকে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর সকালে জানতে পারি, ওই ব্যক্তি সৌদি দূতাবাসের লোক।'
সূত্র জানায়, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুলশানের সৌদি দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করতেন খালাফ। সেখান থেকে ফিরে তিনি বিশ্রাম নিতেন। প্রতিদিন রাত ১১টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যেতেন। এরপর ফিরতেন রাত ২টা বা আড়াইটার দিকে। তিনি যে বাসায় থাকেন সেখানকার লোকজন জানতেন তিনি জগিংয়ে বের হন। কিন্তু রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত কোনো লোক জগিং করে কি না- এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, দুই বছর আগে থেকে সৌদি দূতাবাসে চাকরি করছেন খালাফ। তিনি গুলশানের বাসায় একাই বসবাস করতেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ঘন ঘন গাড়ির চালক ও গৃহকর্মী বদল করেছেন। এর কারণ এখন খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। বর্তমানে যে গাড়িচালক রয়েছেন তিনি মাত্র আট দিন আগে কাজে যোগ দিয়েছেন। আর নতুন গৃহকর্মী যোগ দিয়েছেন চার দিন আগে। গোয়েন্দারা বলছেন, হতে পারে, দৈনন্দিন জীবনে এমন কোনো ঘটনা হয়তো আছে, যেটা প্রকাশ পাওয়ার আশঙ্কাতেই তিনি ঘন ঘন গাড়িচালক ও গৃহকর্মী বদল করতেন।
ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবু সাঈদ এম রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, গভীর রাতে খালাফকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তাঁর বুকের বাঁ পাশে একটি ছিদ্র দেখা যায়। পরে জানা যায়, ওটা গুলির চিহ্ন। চিকিৎসা চলাকালে আইসিইউতে রাখা অবস্থাতেই ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
ময়নাতদন্ত : সৌদি কর্মকর্তা খালাফ আল আলীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত কর্মকর্তা ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, লাশের শরীর থেকে একটি গুলি বের করা হয়েছে। গুলি বুকের বাঁ পাশ দিয়ে ঢুকে ফুসফুস ছিদ্র করে কিডনিতে আঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গুলিটি পিস্তল বা রিভলবারের হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ ভালো বলতে পারবে। ময়নাতদন্তের পর তাঁর মৃৃতদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নিজামুল হক মোল্লা বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা জানা যায়নি। গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম রাতে জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। সৌদি দূতাবাসের কেউ একজন মামলাটি করবেন।
গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, সিআইডির সাত সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। তারা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি জুতার ছাপ ও বিভিন্ন ধরনের প্রিন্ট নিয়েছে। এক থেকে দুজন ঘাতক এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত র‌্যাব-১-এর পরিচালক লে. কর্নেল রাশিদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ছিনতাইকারীদের হামলায় খালাফ খুন হয়েছেন। তবে খুনের পেছনে আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। বিশেষ করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে প্রভাবশালী মহলের কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর : সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খুনের সঙ্গে জড়িত বা জড়িতদের গ্রেপ্তারে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ নাসের আল বুশাইরিকে গতকাল ফোন করে প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন। কূটনৈতিক সূত্র এ খবর জানায়। সূত্র আরো জানায়, প্রধানমন্ত্রী সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ফোন করে শোক প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, সৌদি সরকার এ খুনের কারণ এবং এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত সেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের শোকবার্তা : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিদেশি একজন কূটনীতিক নিহত হওয়ার ঘটনা এ দেশে প্রথম। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে কত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এ ঘটনায় সেটি আবারও নতুন করে প্রমাণিত হলো। তিনি অবিলম্বে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান। খালেদা জিয়া নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবার, নিকটজন ও সৌদি জনগণ এবং সরকারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ : আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তার খুনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, 'আমাদের দেশে এ ধরনের একটি ঘটনা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। পুরো বিষয়টিকে সরকার গভীরভাবে দেখছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' তিনি সৌদি সরকার ও নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

No comments

Powered by Blogger.